নির্বাচন কমিশনের কড়া নির্দেশের পরেও রাজনৈতিক সন্ত্রাস থামতে চাইছেনা রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ে। অভিযোগ ভোট ঘোষনোর পরও রাজ্য পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেন শাসক দলের মন্ত্রী বিধায়করা।শাসক দলীয় নেতা-মন্ত্রীরা নিয়ম ভাঙ্গে সরাসরি ফোন করছেন পুলিশ আধিকারিকদের। নেতা-মন্ত্রীদের ফোন পেয়ে থানা থেকে অভিযুক্ত রাজনৈতিক হামলাকারীকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে পুলিশ। এই ধরনের অভিযোগ তুলেছেন মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিরোধীরা।
অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের জিরো টলারেন্স নীতি শুধুমাত্র ঘোষণা হয়েই থেকে যাচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলে তেমন কোন কাজ হচ্ছে না। পুলিশ সম্পূর্ণভাবেই শাসকদলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। সন্ত্রাসের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জোয়ানরা রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের হাতেনাতে পাকড়াও করার পরও পুলিশ তাদেরকে থানা থেকে ছেড়ে দিচ্ছে।
এই বিষয়ে জানা যায় শনিবার বিকেলে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রর কলাবাগানে সিপিআইএম প্রার্থীর সমর্থনে একটি রাজনৈতিক সভা ছিল। সেই সভাতে যাওয়ার পথে এস এন কলোনির কিছু বিরোধী কর্মী সমর্থককে মারধর করে স্থানীয় বিজেপির গুনাবাহিনী। অভিযোগ মজলিশপুরের বিজেপি মোর্চাসভাপতি শিবায়নের নেতৃত্বে এদিন গোটা হামলার ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। হামলাকারীরা শিবায়নের নেতৃত্বে রাস্তায় মারধর করার পাশাপাশি বিরোধী দলের যেসব কর্মী সমর্থক সেই সভাতে যোগ দিয়েছিলেন তাদের বাড়ি ঘরে গিয়ে ভাঙচুর করে। নিরুপায় হয়ে বিরোধী দলের পরিবারের লোকজন জিরানিয়া থানায় ফোন করে অভিযোগ করেন।
থানার এক পুলিশ আধিকারীকের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ছুটে যায় ঘটনাস্থলে। জিরানিয়া শচীন্দ্র লাল কলোনিতে গিয়ে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী হামলাকারীদের কয়েকজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। তাদের মধ্যে কয়েকজন দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে দলীয় পার্টি অফিসে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী শিবায়নকে হাতেনাতে আটক করে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জোয়ানরা তাকে ঘাড় ধরে পুলিশের গাড়িতে তুলে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ যুব নেতা তখন নিজের পদের বাহাদুরি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জোয়ানদের সাথেও মাস্তানি করার চেষ্টা করে। তখন জোয়ানরা তাকে লাঠির ঘায়ে শান্ত করে থানায় নিয়ে যায়। কমিশনের নির্দেশ ডিঙিয়ে রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং পরবর্তীকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার প্রস্তুতি নিয়েছিল।। অভিযোগ ওই সময় থানায় সরাসরি ফোন আসে এক শাসক দলীয় নেতার। শাসকদের প্রভাবশালীর ফোন পেয়ে পুলিশ তৎক্ষণাৎ শিবায়ন সহ তার সাঙ্গ-পাঙ্গদের থানা থেকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। যদিও পরক্ষণে বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা প্রতিবাদ শুরু করেন। রাজনৈতিক সন্ত্রাসকারীকে হাতেনাতে ধরার পরও কেন ছেড়ে দেয়া হলো তা নিয়ে থানা পুলিশের কাছে উত্তর জানতে চান বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকরা। থানা পুলিশ তখন জানিয়ে দেয় সুস্পষ্ট অভিযোগ না থাকায় তাকে ছাড়া হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন বিধি নিষেধ লংঘন করে পুলিশের সামনে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের পরও পুলিশের এই ধরনের যুক্তি গ্রহণযোগ্য হয়নি। আরো অভিযোগ আক্রান্তদের বাড়ি ঘরের পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে অভিযোগ জমা করার আগেই পুলিশ অভিযুক্তদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশের পঙ্গুদশাকে সামনে তুলে এনেছে বলেও অভিযোগ। এভাবে চলতে থাকলে নির্বাচনের আগে চরম রাজনৈতিক উশৃংখলতা সহ ভোটকে কেন্দ্র করে রাজ্যের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।