প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,,২৬ নভেম্বর,,
বাংলাদেশে আবার অনৈতিকভাবে গ্রেফতার করা হল আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ তথা ইসকনের নেতা শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে। সোমবার বিকেলে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি করছেন মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। কিন্তু এই অভিযোগ সত্য নয় বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন সেই দেশের সনাতন ধর্মীয় লোকজন । অভিযোগ অনৈতিকভাবে শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেফতার এর বিরুদ্ধে গোটা দেশব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সহ বিভিন্ন সামাজিক এবং বুদ্ধিজীবী সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদ করছেন। বাংলাদেশে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ভারতেরও তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক ব্যক্তিত্বরা বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদে সুচ্চার হয়েছেন। নিজের সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশ শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক রতন চক্রবর্তী সহ অনেক মন্ত্রী, বিধায়ক। তারা অবিলম্বে চিন্ময় প্রভুর নিঃশর্তে মুক্তির দাবী করেছেন।
চিন্ময় প্রভুকে বাংলাদেশে গ্রেফতারের ঘটনার প্রতিবাদে সারা বিশ্বের হিন্দু সহ সমস্ত ধর্মাবলম্বী যারা মানবতাবাদী ও হিংসার বিরুদ্ধে তাদের সবাইকে গর্জে ওঠার আহ্বান রেখেছেন বিধায়ক রতন চক্রবর্তী।
বাংলাদেশের হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার করা হয় গত ২৫ নভেম্বর। আজ তাঁকে চট্টগ্রাম জেলা আদালতে পেশ করা হয়। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছিল। এদিকে জানা গিয়েছে, চিন্ময় প্রভুর হয়ে আজ চট্টগ্রামের জেলা আদলাতে ৫১ জন আইনজীবী সওয়াল করেছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করেছিল বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়েছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস প্রভুও। সেই সমাবেশেই নাকি তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা করেছিলেন। এই অভিযোগেই চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় দাস-সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সেই নেতা। পরে ফিরোজকে বহিষ্কার করে বিএনপি। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভুকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এরপর তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। গতকাল চট্টগ্রামেই কারাগারে রাত কাটান চিন্ময় প্রভু। এদিকে অভিযোগ, চিন্ময় প্রভুকে গতকাল ওষুধ দিতে দেওয়া হয়নি পুলিশের তরফে। ধৃত হিন্দু নেতাকে মানসিক এবং শারীরিক ভাবে হেনস্থা করার অভিযোগও উঠেছে।
এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের ঘটনার জেরে বাংলাদেশে সংখ্য়ালঘুদের মধ্য়ে শোরগোল পড়ে যায়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ এই গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছে। এদিকে চিন্ময় প্রভুর মুক্তির দাবিতে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমেছেন কয়েক হাজার হিন্দু। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জেরেই চিন্ময় প্রভুর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা কা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রতিবাদী বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে জামাতে ইসলামির সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এই আবহে অনেক প্রতিবাদী জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভরতি বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে চিন্ময় দাসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, ‘চিন্ময় দাসকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি না দিলে কলকাকাতয় বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনে বিক্ষোভ হবে। এবং বাংলাদেশ সীমান্তে অবরোধ করা হবে।’
Thank you for your information, please be with us 🙏