প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,,আগরতলা,,১০ মে,,
পেট্রোল নয়, এখন পেট্রোল পাম্পে মিলছে পুলিশের লাঠিপেটা। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশের লাঠিপেটা খেয়ে এই অভিযোগ ভুক্তভোগী মহলের। অভিযোগ স্থানীয় একাংশ ক্লাব কর্মকর্তার উস্কানিতে আগরতলা গনরাজ চৌমুহনিতে পুলিশ পেট্রোল সংগ্রহ করতে যাওয়া যুবক এবং মহিলাদের গণহারে লাঠিপেটা করেছে। কয়েকজনকে পিছিয়ে তক্তা করে পুলিশের গাড়িতে তুলে থানায়ও নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত ১১ টার পর এই ঘটনায় গণরাজ চৌমুনিতে সাময়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের লাঠিচার্জের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেন উপস্থিত লোকজন। যদিও পূর্ব থানার পুলিশের দাবি লাঠিচার্জ বলে কিছুই হয়নি। লাইনে দাড়িয়ে পেট্রোল না পেয়ে একাংশ যুবক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পাম্পে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছিল। পরিস্থিতি বেসামাল হওয়াতে পূর্ব থানার পুলিশ সেখানে গিয়ে তাদের কয়েকজনকে ধরপাকড় করে এবং একজনকে গ্রেফতার করা হয়। মহিলাদের লাঠিপেটার ঘটনা অস্বীকার করেছেন পূর্ব থানার ওসি সঞ্জীব সেন।
ঘটনার বিবরণে বলা যায় অতিবৃষ্টির কারণে রেল এবং সড়ক পথে রাজ্যে পণ্য পরিবহন অস্বাভাবিক রয়েছে। বিশেষত গত প্রায় দশ দিনের বেশি সময় যাবত রেল পথে ত্রিপুরাতে জ্বালানিবাহি ওয়াগণ ঢুকতে পারছে না। জাতীয় সড়কে ট্যাঙ্কারে করে জ্বালানি ঢুকলেও সেখানেও অতিবৃষ্টিতে স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে রাজ্যে চাহিদার তুলনায় পেট্রোল ডিজেলের মতো জ্বালানির জোগান কম রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত ৩০ এপ্রিল থেকে খাদ্য দপ্তর জ্বালানি বন্টনের ক্ষেত্রে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করেছিল। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। আগরতলা শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন মহকুমায় পেট্রোল পাম্প গুলিতে দীর্ঘ লাইন দেখা যাচ্ছে। সারাদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত পাম্পে গিয়ে পেট্রোল ডিজেল পাচ্ছেন না অনেক যান চালক। এতে করে তাদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত এমনই ঘটনা ঘটে আগরতলার গনরাজ চৌমুনিতে জ্যোৎস্না ফিলিংস স্টেশনে।
অভিযোগ দীর্ঘ ছয় সাত ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর পাম্পের সামনে গেলে পেট্রোল নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এতে করে একাংশ বাইক চালক যুবক উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। কেন পেট্রোল পাওয়া যাবে না ? তা নিয়ে হই হট্টগোল শুরু করেন। এমন সময় সেখানে হাজির হন স্থানীয় এক ক্লাব কর্মকর্তা সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী। অভিযোগ স্থানীয়দের উস্কানিতে সেখানে উপস্থিত পুলিশ কয়েকজন যুবকের উপর লাঠিচার্জ করে। এমনকি একজন মহিলার সামনে তার স্বামীকে পেটানো হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে পূর্ব থানার ওসি সঞ্জীব সেনের নেতৃত্বে পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য কয়েক বছর আগেও একবার পেট্রোল সংকটের সময় গণরাজ চৌমুনিতে এই পাম্পের সামনে পেট্রোল নিতে আসা বাইক চালকদের উপর মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। তখনও অভিযোগ ছিল স্থানীয় ক্লাব কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীরা পেট্রোল নিতে আসা যুবকদের মারপিট করেছিলেন। এই এলাকার একটি অংশ বরাবরই স্থানীয় হওয়ার দাপট খাটিয়ে পেট্রোলের লাইনে দাঁড়ানো যানবাহন চালকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং তাদের হেনস্তা করতে পছন্দ করেন বলেও অভিযোগ।