প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ৭ সেপ্টেম্বর,,
উগ্র ধর্মান্ধদের দ্বারা এবারে কলঙ্কিত হল বিশালগড় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাবিদ্যালয়। ত্রিপুরার এই কলেজে এক মুসলিম ছাত্রকে উগ্র হিন্দুত্ববাদী কয়েকজন ছাত্র জোর করে একটি ক্লাসের মধ্যে আটকে রেখে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। তাকে “জয় শ্রীরাম” স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ঘন্টার পর ঘন্টা কলেজ চত্বরের ভেতর মুসলিম সম্প্রদায়ের ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন খোদ কলেজের কয়েকজন অধ্যাপক। তারা বিষয়টি প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলেও এবিভিপি ছাত্র সংগঠনের পরিচয়ধারী সেই উগ্র ধর্মান্ধ ছাত্রদল অধ্যাপকদেরও ধমক দিয়ে সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ।
পরবর্তীকালে খবর পেয়ে বিশালগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রকে উদ্ধার করে। নির্যাতনের শিকার ছাত্রের নাম দুর্জয় চৌধুরী। তার বাড়ি বিশালগড়ে। সে কলেজের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। শুক্রবার কলেজে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের কয়েকজন ছাত্র তাকে জোর করে ধরে একটি ক্লাসের মধ্যে নিয়ে আটকে রাখে। সেখানে তাকে মারধর করা হয়। মুসলিম হওয়ায় তার ধর্ম নিয়ে গালাগাল করা হয় এবং তাকে জোর করে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়ানা হয় বলে অভিযোগ। তিন ঘন্টা পর কলেজের প্রিন্সিপাল রুমা সাহা মহোদয়া উশৃংখল ছাত্রদের কবল থেকে দুর্জয়কে ছাড়ানোর জন্য হস্তক্ষেপ করলেও তিনি ব্যর্থ হন। এবিভিপির নামধারী গুন্ডারা অধ্যক্ষ মহোদয়কে পাত্তাই দেননি । অভিযোগ উগ্র সেই ছাত্রদলটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওই ছাত্রকে খুনের চেষ্টা করেছে। পরবর্তীকালে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। আশ্চর্যের বিষয় আক্রান্ত ছাত্র এই ঘটনায় নাম ধাম সহ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করছে না। শনিবার এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এন এস ইউ আই। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা এবং বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনের নির্দেশে ত্রিপুরা প্রদেশ এন এস ইউ আই এর ছাত্রনেতা আমির হোসেন বিশালগড় মহকুমা ইউনিটের ছাত্র নেতৃত্বদের নিয়ে দুর্জয় চৌধুরীর বাড়িতে যায়। আমির হোসেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি তুলেছেন। প্রসঙ্গত ত্রিপুরার ইতিহাসে এইভাবে কলেজ চত্বরের ভেতর ধর্মের ভিত্তিতে কোন ছাত্রের উপর আক্রমণের ঘটনার নজির নেই। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে তৈরি করা বিশালগড় কলেজের ভেতর এই ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ত্রিপুরার কলেজ শিক্ষার ইতিহাসে নতুন কলঙ্ক রচিত করেছে বলে তথ্যবিজ্ঞ মহলের দাবি।