প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,,১৩ আগস্ট,,
ক্ষমতার লোভ এবং সুবিধাবাদী মানসিকতায় চূড়ান্ত রাজনৈতিক নোংরামি শুরু হয়েছে শাসকদলের একাংশে। বিরোধী নয়, খোদ শাসকদলের একাংশই গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা করতে ঘৃণ্য রাজনীতি করে নিজের দলীয় নেতাদের অপমান এবং ক্ষতি করতে গিয়ে সার্বিকভাবে দলের ক্ষতি করে চলছেন। বিগত দিনে রাজ্যের বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে শাসক দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে দেখা গেছে । এবার এমনই ঘৃণ্য রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে । মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে সামাজিক মাধ্যমে খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের খয়েরপুর দলুরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবযানী চৌধুরীর ছবি সহ বিডিও এবং একটি ভয়েস রেকর্ডিং ভাইরাল হয়েছে।

সেই ভাইরাল ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে খয়েরপুর দলুরা পঞ্চায়েত প্রধান দেবযানী চৌধুরী অন্য আরেকজন মেয়েলোকের সঙ্গে এলাকার বিধায়ক সহ মন্ডল নেতাদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য করছেন। এই ভিডিও কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে পড়ে। স্বাভাবিকভাবেই এলাকার বিধায়ক সহ খয়েরপুরের মন্ডল নেতাদের নিয়ে কিছু মহলে ভুল বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি সহ ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। কেননা খয়েরপুরের বিধায়ক রাজ্যের একজন প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। ত্রিপুরার তাত্ত্বিক নেতা এবং সুবক্তা হিসেবে বিধায়ক রতন চক্রবর্তীর বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। সমসাময়িক রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায় বিধায়ক রতন চক্রবর্তী অত্যন্ত শিক্ষিত এবং নৈতিক চরিত্রের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি রয়েছেন। তিনি প্রাক্তন মন্ত্রী এবং প্রাক্তন বিধানসভার অধ্যক্ষ । সবদিকেই তিনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত রয়েছেন।
কিন্তু বর্তমান সময়ে বিধায়ক রতন চক্রবর্তীর মত একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে তার শুভাকাঙ্ক্ষী মহলেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এলাকার লোকজন গণহারে এই ভাইরাল ভিডিও এবং মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ শুরু করেছেন। শুধুমাত্র শাসক দল নয় বিরোধী শিবিরেও রতন চক্রবর্তীর মতো প্রবীর নেতৃত্ব নিয়ে এই ধরনের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা চলছে। এর মধ্যেই সেই ভাইরাল ভিডিও বার্তার স্পষ্টিকরণ দিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দেবযানী চৌধুরী । তিনি একটি বার্তায় জানিয়েছেন বিধায়কের বিরুদ্ধে এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তা সঠিক নয়।
(ভিডিও দেখতে প্লে বাটনে ক্লিক করে চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন )
দেবযানী চৌধুরী বলেন কিছু মন্তব্য তিনি নিজের অজ্ঞতার দরুন করেছেন এবং কিছু মন্তব্য তাকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে করানো হয়েছে। তিনি স্বীকার করেছেন তিনি নিজে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তিনি নিজের অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্যের জন্য বিধায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। পাশাপাশি আগামী দিনে চক্রান্তকারীদের সমস্ত সত্য সামনে আনবেন বলেও একপ্রকার হুমকি দিয়েছেন। তবে ভিডিও বার্তা এবং পাল্টা ভিডিও বার্তায় গোটা বিষয়টি নিয়ে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক মহলে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। রাজনীতির নামে বর্তমান সময়ে মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত এবং গোপনীয় বিষয় ভাইরাল করে যেভাবে ব্যক্তি স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে তাতে মানুষের সুস্থ চিন্তাধারা এবং নৈতিকতায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সমাজে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস কমছে এবং ভয়ানক সামাজিক অবক্ষয় তৈরি হয়েছে। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে এই সমস্ত ঘটনার প্রতিবাদে রোখে দাঁড়ানো উচিত বলেই শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক মহলের দাবী।