Home জাতীয় খবর সরকার সহ সবার প্রচেষ্টায় বন্যা পরিস্থিতি রিকভার হচ্ছে: মুখ্যমন্ত্রী

সরকার সহ সবার প্রচেষ্টায় বন্যা পরিস্থিতি রিকভার হচ্ছে: মুখ্যমন্ত্রী

0
Oplus_131072

আগরতলা,,১১ জানুয়ারি,,

“আগস্ট মাসের ত্রিপুরার ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু আমরা যতটুকু ভেবেছিলাম তার থেকে অনেক দূর রিকভার করে উঠতে পেরেছি। সরকার এবং সবাই মিলে আমাদের প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।”২০২৪ সালের আগস্ট মাসে রাজ্যে ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরে বিধানসভায় এই বক্তব্য রাখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডক্টর মানিক সাহা। বিধানসভায় বিরোধীদলের এক বিধায়কের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আগস্টের ভয়াবহ বন্যা, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি এবং সরকার সহ সার্বিক প্রচেষ্টায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার যাবতীয় তথ্য তুলে ধরেন।

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যের বিরোধীদল সহ নাগরিক অংশের সহযোগিতার প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ১৯-২৩ আগস্ট ২০২৪ বন্যায় রাজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং সিপাহীজলা জেলায় । এই বন্যায় ১৭ লক্ষ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। ৪ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছিল। ৮৮৯টির বেশি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছিল। ২ লক্ষ মানুষকে সেখানে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও বন্যায় ৩৮ জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন বলে মুখ্যমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বন্যায় ৫৮ হাজার ৭৮০ টি বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে কৃষি এবং উদ্যান বিভাগের। সেই ক্ষতির পরিমাণ ৩২৫২ কোটি টাকা বলে মুখ্যমন্ত্রী তথ্য তুলে ধরেন। একইভাবে ৩০৮৩ কোটি টাকা জলসম্পদ বিভাগের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৯০০ কোটি টাকা পূর্ত দপ্তরের রাস্তাঘাট খরচ ক্ষতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় দুর্যোগ মোকাবেলা টিম সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। এস ডি আর এফ এর ৩২টি এবং এনডিআরএফ এর ১১ টি দল বন্যায় উদ্ধার কার্য চালিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তর বিহার এবং অরুণাচল প্রদেশ থেকে ত্রিপুরার বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য টিম পাঠিয়েছিল। তিনটি হেলিকপ্টার বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার কাজ করেছে। একইভাবে রাজ্য স্থিত আসাম রাইফেল, এবং দমকল বিভাগ বন্যা দুর্যোগ মোকাবেলায় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন বন্যা দুর্গত ত্রিপুরায় পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রীর কাছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ খাতে টাকা পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছিল। রাজ্য খাতে টাকা মঞ্জুর হয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রান্ত হবে ৩৪ কোটি ৯৮ লক্ষ টাকা জমা পড়েছিল। এই তহবিল থেকে দুই দফায় যথাক্রমে ১২ কোটি এবং ১৩ কোটি টাকা রাজস্ব দপ্তরের মাধ্যমে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন ইতিমধ্যেই বন্যা দুর্গত অনেক রাস্তাঘাট মেরামত হয়ে গেছে। কৃষি দপ্তরের সরকারি প্রচেষ্টায় বন্যা দুর্যোগ কাটিয়ে রাজ্যের কৃষি ক্ষেত্রে ধান এবং সব্জি ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। বন্যায় মৃতদের পরিবারে রাজ্য সরকারের তরফে চার লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেওয়া হয়েছে। একইভাবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে আরও দুই লক্ষ টাকা করে মৃতের পরিবার পাচ্ছে। বন্যা দুর্গত কৃষকদের ও নানাভাবে সাহায্য প্রদান করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন সবার সহযোগিতায় বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে। প্রসঙ্গত শুক্রবার থেকে শুরু হলো ত্রয়োদশ ত্রিপুরা বিধানসভার ষষ্ঠ অধিবেশন। তিন দিনের অধিবেশনের শুরুতে বক্তব্য রাখেন রাজ্যপাল ইন্দ্রসেনা রেড্ডি নাল্লু। তিন দিনের অধিবেশন চলবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত। অধিবেশনে আগামী দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় আসবে বলে জানা গেছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version