Home ত্রিপুরার খবর জেলার খবর ভোটের পর লাপাত্তা রাজা মহারাজা ! প্রশাসনিক উদাসীনতায় গাছ তলায় জনজাতি পরিবার।

ভোটের পর লাপাত্তা রাজা মহারাজা ! প্রশাসনিক উদাসীনতায় গাছ তলায় জনজাতি পরিবার।

0

প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, বিশালগড়,, ৫ মে,,

ভোটের রাজনীতি শেষ হতেই লাপাত্তা রয়েছেন রাজা-মহারাজারা। প্রধানমন্ত্রীর তথাকথিত ‘হীরার’ রাজ্য ত্রিপুরায় এখন গাছতলায় ঘুমাতে হচ্ছে, সাধারণ জনজাতি পরিবারকে। ঘটনার বিবরণে জানা যায় প্রায় দেড় মাস আগে শিলা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল চড়িলাম ব্লকের রংমালা ভিলেজের শরৎ চৌধুরীপাড়া এলাকায় বিজয় দেববর্মার বাড়ি। প্রচন্ড শিলাবৃষ্টির দরুন বিজয় দেববর্মার বাড়ির ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গিয়েছিল। সেই টিনের চালের ফটো দিয়ে আকাশ দেখতে পান বাড়ির লোকজন।

কিন্তু সেই আকাশ থেকে যখন বৃষ্টি ঝরে পড়ে তখন আর ঘরের মধ্যে থাকতে পারে না অসহায় পরিবারের লোকেরা। বৃষ্টির জল ঘরের মধ্যে ঢুকে বিছানা ভিজে যায়। ঘরে হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যায়। বিজয় দেববর্মার বিবরণ যখনই বৃষ্টি আসে তখন তাকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কিংবা বারান্দায় গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়। কিন্তু তার বাবার ঘরও ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে। সেখানেও তার আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা নেই। এইজন্য দুদিন আগে থেকে তিনি পরিবার নিয়ে বাড়ির গাছ তলায় আশ্রয় নিচ্ছেন। তার দাবি গত দুদিন যাবত তিনি রাতে গাছ তলায় ঘুমান।

গাছতলায় বৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ রেহাই না মিললেও ঘরের ভেতর থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত বলে তিনি দাবি করেছেন। অভিযোগ দেড় মাস আগে শিলাবৃষ্টিতে তার ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রশাসনের এক দুজন আধিকারিক তাদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আশ্বাস আজ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ পায়নি। অভিযোগ শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরও বিজয় দেববর্মার পরিবার কোন সরকারি সাহায্য পায়নি। প্রশাসনিক উদাসীনতায় তারা গাছ তলায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। অভিযোগ শাসক দলের বিজেপি কিংবা মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর দেব বর্মনের মথার কোন রাজনৈতিক নেতা বিজয় দেববর্মার পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে না। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। জনজাতিদের উন্নয়নে সরকার তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে মথা সুপ্রিমো মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর দেব বর্মনের ভূমিকা নিয়েও। কারণ কিছুদিন আগে রাজ্যের দুটি লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের আগে বিজেপি দলের নেতৃত্ব এবং মথা সুপ্রিমো রাজা-মহারাজারাদের ভূমিকায় রাজনৈতিক প্রচারে নেমেছিলেন। মহারাজ প্রদ্যুৎ কিশোর দেব বর্মন বিজেপির সাথে হাত মিলিয়ে নিজের বড় বোনের টিকেট হাসিল করেছিলেন। বিজেপির টিকেটে নিজের বোনকে জয়ী করার জন্য মহারাজ সহজ সহজ জনজাতি অংশের মানুষকে নানাভাবে আকৃষ্ট করেছেন বিজেপিকে ভোট দানের জন্য। মহারাজ ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যের জনজাতিদের প্রকৃত উন্নয়ন করতে পারে একমাত্র বিজেপির। কিন্তু সেই উন্নয়ন আদতে কি ধরনের হবে তার বাস্তব প্রমাণ সামনে চলে এসেছে ভোটের পর। অভিযোগ নির্বাচন শেষ হতেই পরিযায়ী পাখির মত মহারাজ সহ তার দলনেতারা এখন লাপাত্তা রয়েছেন। ভোটের রাজনীতি শেষ হতেই অসহায় হয়ে পড়েছেন জনজাতি অংশের মানুষ। চড়িলামে জনজাতি পরিবারের দুর্দশা সামনে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে, যদি চরিলাম কেন্দ্রে জনজাতিদের এই অবস্থা হয় তাহলে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রাম পাহাড়ে কি অবস্থায় আছেন জনজাতি অংশের মানুষ? এই ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে সাধারণ জনজাতি অংশের মধ্যে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version