প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১৩ ডিসেম্বর,,
রাজ্যের সার্বিক আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নয়নে উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে নজির তৈরি করেছে মুখ্যমন্ত্রী নেতৃত্বাধীন ত্রিপুরা স্বরাষ্ট্র দপ্তর। অনুপ্রবেশকারীদের ধরপাকড়, মাদক কারবারীদের লাগাম টানা সহ উগ্রপন্থী সমস্যা নির্মূল করার মধ্য দিয়ে বছরব্যাপী ত্রিপুরা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকান্ডের ইতিবাচক প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে ডিসেম্বর মাসে। চলতি ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যে অনুষ্ঠিত করতে চলেছে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এনইসি বৈঠক । শুধু তাই নয়, ডিসেম্বর মাসেই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হতে চলছে আন্তর্জাতিক স্তরের কুম্ভ মেলা। যেখানে আমন্ত্রিত রয়েছেন দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে নেপাল, ভুটানের মহারাজ এবং বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। ত্রিপুরার প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই রাজ্যে এই সমস্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন ত্রিপুরা পুলিশের প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ভরসার বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। বছর শেষে রাজ্যের বুকে কেন্দ্রীয় স্তরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি রাজ্যের সার্বিক আইনশৃঙ্খলার উন্নতিকে সামনে তুলে এনেছে।
এই বিষয়ে রাজ্যে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক আধিকারিকের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিগত তিন বছরে রাজ্যের নিরাপত্তা সহ দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষায় ত্রিপুরা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বিশেষ সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যে অনুপ্রবেশ বাড়লেও ত্রিপুরা পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতায় প্রতিদিন অনুপ্রবেশকারীরা ধরা পড়ছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারীদের।
একইভাবে ত্রিপুরার গোয়েন্দা পুলিশের সাফল্যে বিগত বছরগুলিতে রাজ্যের রেকর্ড সংখ্যক মাদক সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পাচার রুখে দিয়েছে ত্রিপুরা পুলিশ। ভারত থেকে পাচারের পথে প্রচুর পরিমাণ স্বর্ণ, এবং অন্যান্য পণ্য সামগ্রী আটক হয়েছে ত্রিপুরা সীমান্তে।
সেই সাথে এন এল এফ টি এবং এটিটিএফ- এর মত উগ্রপন্থী সংগঠনের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা এখন উগ্রপন্তী সমস্যা মুক্ত। চুরি ,খুন, ধর্ষণ সহ অন্যান্য সামাজিক অপরাধের ঘটনাও রাজ্যে কমছে। সব মিলিয়ে বিগত কয়েক বছরের তথ্যে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির তুলনায় ত্রিপুরা পুলিশের সাফল্য অনেকটাই শিখরে রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সহ শান্তি স্থাপনে ত্রিপুরা পুলিশের কর্মদক্ষতার জন্যই বর্তমানে ডিসেম্বর মাসে ত্রিপুরায় একাধিক কেন্দ্রীয় উত্তরের কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ২০ ডিসেম্বর থেকে আগরতলায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে এনইসি বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই সীমান্ত সংলগ্ন রাজ্যের রাজধানীতে কেন্দ্রীয় স্তরের এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ইচ্ছে করলেই বাংলাদেশের পরিস্থিতির নিরিখে আগরতলায় এই কর্মসূচি বাতিল করতে পারতো। কিন্তু ত্রিপুরা পুলিশের কর্মকান্ড কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পূর্ণ নিরাপত্তার ভরসা যুগিয়েছে বলেই আগামী দিনের এই বৈঠক আগরতলায় অনুষ্ঠিত হতে চলছে।
একইভাবে ডিসেম্বর মাসেই আগরতলা সংলগ্ন রানির বাজারে অনুষ্ঠিত হতে চলছে আন্তর্জাতিক স্তরের কুম্ভ মেলা। সূত্রের দাবি সেই মেলায় দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে, ভুটান এবং নেপালের মহারাজ আমন্ত্রিত রয়েছেন। আমন্ত্রিত রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। আন্তর্জাতিক স্থরের এই কুম্ভ মেলায় দেশ-বিদেশের সাধুসন্তরা উপস্থিত হবেন। প্রায় পাঁচ দিন ব্যাপী এই কুম্ভ মেলা চলবে। এনইসি বৈঠকের মতোই রানির বাজারে আয়োজিত কুম্ভ মেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। উভয় ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সর্বাত্মক সুনিশ্চিত করতে ত্রিপুরা পুলিশ এবং তাদের গোয়েন্দা বিভাগ তৎপর রয়েছে। এই সমস্ত অনুষ্ঠানগুলিকে সর্বাত্মক নিরাপত্তার মধ্যে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেওয়া হয়েছে গোটা রাজ্যেকে। সীমান্তে করা নজরদারির পাশাপাশি সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলিতে চলছে বিএসএফ এর সাথে পুলিশ এবং টি এস-র যৌথ টহল।
(ভিডিও দেখতে প্লে বাটনে ক্লিক করে চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করুন)