প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১৭ জুন,,
দার্জিলিং জেলায় নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশনে পৌঁছার আগে রাঙাপানি স্টেশনে ভয়ানক দুর্ঘটনার কবরে পড়ল ত্রিপুরার যাত্রীবাহী রেল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সকাল ৮:৫৫ মিনিটে যাত্রীবাহী রেলের পেছন দিকে একটি মালগাড়ির ধাক্কায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুপুর ১:৩০ টায় খবর রাখা পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় ১০ জন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। গুরুতর আহত রয়েছেন ৩০ জন। অল্পবিস্তর আহতের সংখ্যা অর্ধ শতাধিক। দুর্ঘটনায় পর রেল লাইনের আশেপাশের নাগরিক সহ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলা প্রশাসন উদ্ধার কার্যে নামে।
হতাহতদের দ্রুত উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি মাদ্রাসাতে অস্থায়ী শিবিরে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। হতাহত যাত্রীদের মধ্যে ত্রিপুরার কেউ আছেন কিনা তা খবর লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে স্পষ্টভাবে জানা যায়নি। দুর্ঘটনার পর ত্রিপুরা রাজ্য প্রশাসন প্রতিনিয়ত খবর রেখে চলছে। রেল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক মানিক সাহা নিজের বাসভবনে তড়িঘড়ি রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ত্রিপুরা প্রশাসনের একটি টিম ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। বিকেলের মধ্যে তারা সেখানে পৌঁছে যাবেন। রাজ্য প্রশাসনের স্বরাষ্ট্র সচিব পিকে চক্রবর্তী প্রথমে সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছিলেন ৫ জন মারা গেছেন এবং ৩০ জন আহত হওয়ার খবর রয়েছে।
হতাহতদের মধ্যে রাজ্যের কেউ রয়েছেন কিনা তা তিনি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন এই দুর্ঘটনায় যদি ত্রিপুরার কোন যাত্রী মারা যান তাহলে তাকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ত্রিপুরার কেউ আহত হলে তার পূর্ণ চিকিৎসারভার রাজ্য সরকার বহন করবে। তবে প্রশাসনের সাংবাদিক সম্মেলনের আধ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুর সংখ্যা ১০ পর্যন্ত পৌঁছেছে বলে রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। তিনি বলেন দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এর পেছনের দিকের ৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর মধ্যে দুটি বগি যাত্রীবাহী ছিল এবং দুইটি বগিতে লাগেজ ছিল। দুর্ঘটনায় বগি গুলির রীতিমতো দুমড়ে মুচড়ে যায়। উদ্ধার কার্য দ্রুত শুরু হলেও খবর লেখা পর্যন্ত সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। ফলে এই হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে দুপুর ১ টা নাগাদ দুর্ঘটনাস্থল থেকে এই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস অক্ষত যাত্রীদের নিয়ে ১৫ টি বগি সহ শিয়ালদার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। প্রসঙ্গত রবিবার সকাল টায় আগরতলা থেকে দুইটি লাগেজ বাহী বগি সহ মোট ২৩ টি বগি নিয়ে যাত্রীবাহী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস শিয়ালদা উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। সোমবার সকাল আটটা ৪৫ মিনিট নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় রাঙাপানিয়াতে এই রেলের পেছনে একটি পণ্যবাহী রেল ধাক্কা দেয় এবং দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় পণ্যবাহী রেলের লোকো পাইলটও মারা গেছেন বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।