Home জাতীয় খবর স্বাধীন ভারতবর্ষের সবচেয়ে ধীকৃত কৃষক বিরোধী সরকার হলো মোদি সরকার ! ধর্মনগরের...

স্বাধীন ভারতবর্ষের সবচেয়ে ধীকৃত কৃষক বিরোধী সরকার হলো মোদি সরকার ! ধর্মনগরের কৃষক সবার কনভেনশনে মন্তব্য হান্নান মোল্লার

0

আগরতলা,,১০ নভেম্বর,,

নরেন্দ্র মোদি সরকার স্বাধীনতার পরে ভারতের সবচেয়ে ধীকৃত কৃষক বিরোধী সরকার।মোদী কৃষকদের হাত ধরে ক্ষমতায় এসে কৃষকদের মাথায় আঘাত করে মুনাফাখোরদের ক্রীতদাসে পরিণত করতে চাইছে।কৃষি ব্যবস্থাকে করপোরেটদের হাতে তুলে দিতে চাইছে।আজ ধর্মনগরে কৃষক সভার উদ্যোগে আয়োজিত মহা কৃষক কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সংযুক্ত কিষান মোর্চার অন্যতম নেতা তথা সারা ভারত কৃষক সভার কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি হান্নান মোল্লা এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন ৯২-৯৩ সাল থেকে নব উদার নীতিতে ভারতীয় কৃষি ও কৃষক সমস্যায় পড়েছিল।আর নরেন্দ্র মোদী সরকারে এসেই সংকটে ফেলে দিয়েছে।তিনি বলেন মোদি সরকারের এই কৃষকদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দিতে সংযুক্ত কিষান মোর্চা আবার বৃহৎ আন্দোলনে যাচ্ছে।তার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে আগামী ২৬ থেকে ২৮ নভেম্বর দেশের প্রত্যেকটি রাজ্যের রাজভবন তিন দিনের জন্য ঘেরাও হবে ,আগরতলাতেও হবে । হান্নান মোল্লা বলেন কৃষকরা অন্নদাতা।তাঁরা কি চেয়েছিলেন?চেয়েছিলেন একটা সুস্থ ও সুষ্ঠু কৃষি নীতি।আর নরেন্দ্র মোদি চাইছেন কৃষক তাঁর নিজের জমি করপোরেটদের হাতে তুলে দিয়ে কৃষক করপোরেটদের ক্রীতদাস হয়ে যাক।সেটা কৃষক সভা ও সংযুক্ত কিষান মোর্চা মেনে নেবে না।হান্নান মোল্লা বলেন ১৪ সালে ৩০০টি সভায় বক্তৃতা করে স্বামীনাথনের সুপারিশ মেনে কৃষকদের ন্যুনতম সহায়ক মূল্য দেয়ার কথা ঘোষণা করলেও প্রধানমন্ত্রী হয়ে সব ভুলে গেছেন।উল্টে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে তাঁর সরকার বলেছেন ন্যুনতম সহায়ক মূল্য দেয়া সম্ভব নয়।তিনি বলেন দেশের কৃষকদের কাছে তিনি বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন,বিদেশে সরকারী সফরে গিয়ে আদানিদের হয়ে কথা বলে যাচ্ছেন।আদানিরা যখন দেখেছেন শিল্পে তেমন এগিয়ে যাওয়া যাবে না তখন কৃষির ২৫ লাখ কোটি টাকার দিকে হাত বাড়িয়েছেন।সহায়তা করে যাচ্ছেন মোদী সরকার।এই সরকার খাদ্য নিরাপত্তা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রেশনিং ব্যবস্থা তুলে দিয়ে করপোরেটদের সুবিধা করে দিতে চাইছে বলে হান্নান মোল্লা অভিযোগ করেন।তিনি বলেন কৃষক আন্দোলনের সময়ে যে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিলেন আজ দু বছর ধরে মোদী সরকার তা রক্ষা করেন নি।তিনি বলেন আর রেয়াত করা হবে না। নভেম্বরের তিনদিনের কর্মসূচি পালন করে ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে রাজ্যে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত হবে ।এবার আন্দোলন শুধু দিল্লি ভিত্তিক হবে না।তিনি বলেন মোদি সরকার এমন নির্লজ্জ যে কোভিডের সময়ে অন্নদাতারা কোভিডের সাথে লড়াই করে যখন ভারতবাসীদের খাবার জোগান দিয়েছে তখন মোদি কৃষকদের পুরস্কার দিয়েছেন তিন কালা কানুন এনে জমি কেড়ে নেবার চেষ্টা করে।হত দেয়নি সংযুক্ত কিষান মোর্চা ।হান্নান মোল্লা বলেন এরপর সংযুক্ত কিষান মোর্চা দেখাতে পেরেছে মোদী সরকারকে নতজানু করিয়ে।তিনি বলেন এরপর আবার বিশ্বাসঘাতকতা, ন্যুনতম সহায়ক মূল্য থেকে সব দাবি মেনে, লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে দু বছর ধরে তা রক্ষা করেন নি।এবার মোক্ষম জবাব দিতে প্রস্তুত সংযুক্ত কিষান মোর্চা বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনো বাছ বিচার না করে সকলকে সাথে নিয়ে চলার ওপর তিনি জোর দেন।এই ব্যাপারে তিনি কিছু কিছু নেতার সমালোচনাও করেন।তিনি বলেন সংগঠন ছাড়া কোনো আন্দোলনের যেমন সাফল্য আসে না তেমনি মানুষের সাথে যোগাযোগ ছাড়া সংগঠন হবে না যেটা দেখিয়েছে সংযুক্ত কিষান মোর্চা।তিনি বলেন ফ্যাসিস্ট সবসময় একতা ভাঙার চেষ্টা করে যাবে যেটা আর এস এস করে যাচ্ছে সেটা রুখতে হলে বাড়ী বাড়ী যেতে হবে জন সংযোগ স্থাপন করতে হবে ।ত্রিপুরা সম্পর্কে তিনি বলেন এখানেও ঐক্য ভাঙার চেষ্টা করেছে আর এস এস।তিনি বলেন আমরা মহিলা ও যুবকদের কৃষক সভার মধ্যে এনেছি,বৃহস্পতিবার আগরতলায় বিশাল সংখ্যক যুবকদের উপস্থিতিতে এক কনভেনশন হয়েছে।রাজ্যের কৃষক সভার সম্পাদক পবিত্র কর বলেন রাজ্যে কৃষি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

ধান চাষ এই রাজ্যের কৃষকদের ও কৃষি ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটেছিল।সব শেষ করে দেয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।তিনি বলেন বীজ নেই,সার নেই, জলসেচের ৯০শতাংশ মেশিন খারাপ ফলে সেচ নেই। কৃষি দফতর ভাত ঘুমে। বীজের সংকট মেটাতে রাজ্যের কৃষকদের বাংলাদেশের বীজের ওপর ভরসা করতে হয়।এর ওপর যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস।তিনি বলেন এক হাজার রাবার বাগান নষ্ট করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের দুষকৃতকারীরা,নষ্ট করেছে সবজি ক্ষেত এমনকি পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নষ্ট করেছে।তিনি বলেন ক্ষমতাসীনরা নিজের রাজ্যের অর্থনীতিকে নষ্ট করে দিতে নিজেরাই দুষ্কৃতকারীদের লেলিয়ে দিচ্ছে এই ঘটনা বিরল।এর ফলে শাক সবজি অগ্নিমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। রাজ্য কৃষক সভা বিভিন্ন স্তরে ডেপুটেশন দিয়ে ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করে যাবে ।তিনি বলেন কমিটিতে দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে আন্দোলন সংগঠিত হবে।তিনি বলেন যুব সমাজও কৃষক সম্প্রদায় থেকে কনভেনশনের মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবারের আন্দোলনের ব্যাপক রূপ নেবে।তিনি বলেন প্রত্যেক ভিলেজ কমিটি ও গ্রাম স্তর থেকে অন্তত দশজন করে ২৮ নভেম্বরের বিধানসভা অভিযানে অংশ নেবেন।তিনি বলেন রাবারের দাম তলানিতে, সবজি থেকে পান সুপারির বাজার নেই।কৃষকরা বিকল্প হিসেবে অন্য রাজ্যে কাজে চলে যাচ্ছে।তিনি বলেন আবার ধান কেনার নাম করে কৃষকদের ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে এরা এখন পর্যন্ত মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ ধানও কেনেনি। ।সুতরাং সংযুক্ত কিষান মোর্চা রাস্তায় আছে ও থাকবে বলে পবিত্র কর তাঁর বক্তব্যে সাফ জানিয়ে দিলেন ।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version