সংবাদ প্রতিনিধি ,, আগরতলা,,৩ এপ্রিল,,
নির্বাচনের মুখে ত্রিপুরায় আমদানির আগে রেল কন্টেনার ভর্তি বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল উদ্ধার হল গুজরাট এবং পাটনায়। নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো তথা এনসিবি এবং গুজরাট পুলিশের অভিযানে এই মাদক সামগ্রী ধরা পড়েছে বল খবর। উদ্ধারকৃত মাদক পণ্যের বাজার মূল্য ২৬ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে। ঘটনার বিবরণের জানা যায় পণ্যবাহী রেলের কন্টেনারে ভর্তি করে আসাম হয়ে ত্রিপুরাতে আনার চেষ্টা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল । দুই রাজ্যে পরপর দুইবার এনসিবি অভিযান করে দুটি কন্টেনারে বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল আটক করেছে। প্রথম অভিযান হয় গুজরাটে রেল স্টেশনে। পরবর্তীকালে গুজরাট পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে পাটনার বাঁচবারণ স্টেশনে আটক করা হয় আরেকটি কন্টেনার ভর্তি ফেন্সিডিল। ডিপি ওয়ার্ল্ড নামক কন্টেনারে আটক হয় ফেন্সিডিল ভর্তি কার্টুন।

সূত্রের দাবি এনসিবির হাতে উদ্ধার বিপুল পরিমাণ মাদক উত্তর পূর্বাঞ্চলের কুখ্যাত মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত ত্রিপুরার বক্সনগরের অপু রঞ্জন দাসের। প্রাথমিক তদন্তে এন সি বি উদ্ধারকৃত নেশা সামগ্রী মালিক হিসেবে অপু রঞ্জন দাসের নাম পেয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই গুজরাট পুলিশ ও পাটনা এনসিবি শাখা বক্সনগরে অপু রঞ্জন দাশের বাড়িতে অভিযান করে । একইভাবে এই মামলায় নাম উঠে এসেছে বক্সনগর এলাকার হোটেল ও টাইলস ব্যবসায়ী তথা কুখ্যাত নেশা কারবারি টিটু মিয়ার। গুজরাট পুলিশ এবং এনসিবি টিটু মিয়ার দোকানেও অভিযান করে। তবে গুজরাট পুলিশের অভিযানের আগেই তারা গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয় । নির্বাচনের আগে এসব বিপুল পরিমাণ মাদক সামগ্রী ত্রিপুরায় আমদানির চেষ্টার প্রকৃত কারণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী তাদের লাইন ম্যান হিসেবে কাজ করছে আগরতলা কের চৌমুহনীর তন্ময় ওরফে রাজু । ত্রিপুরা পুলিশ এবং প্রশাসনের কর্তাদের মেনেজ করে বছরের পর বছর মাদক কারবার সচল রাখার দায়িত্বে রয়েছেন তন্ময় । অপু এবং টিটুর বিরুদ্ধে মাদক কারবার সহ অস্ত্র আইনের একাধিক মামলা রয়েছে এন সি বি ও রাজ্য পুলিশে । কিন্তু তারপরও শাসক দলের প্রভাব এবং প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাখার ফলে অপুকে কেউ গ্রেপ্তার করার সাহস দেখায় না বলে অভিযোগ । গত দুই মাস আগে রাজ্য ক্রাইম ব্রাঞ্চ অশ্বিনী মার্কেট এলাকা থেকে অপুকে গ্রেফতার করতে অভিযান করেছিল। কিন্তু অপুর সাঙ্গোপাঙ্গরা উল্টো ক্রাইম ব্রাঞ্চের উপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে । সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তখন ক্রাইম ব্রাঞ্চকে কোন সহযোগিতা করেনি। পুলিশের সহযোগিতার অভাবে ক্রাইম ব্রাঞ্চ কোন রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালায়। সূত্রের দাবি অপু রঞ্জন দাসের আগরতলা ও কলকাতাতে রয়েছে কোটি কোটি টাকার মাদক কারবার সহ নামে-বেনাম সম্পত্তি । অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নেশা মুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যমাত্রাকে ধূলিসাৎ করে শাসকদল এবং পুলিশ প্রশাসনের একাংশ অপুর কাছ থেকে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা কমিশনের ভিত্তিতে তার মাদক কারবার ছাড় দিয়ে রেখেছিল। কিন্তু মাদক বিরোধী জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং বহিরাজ্যের পুলিশের হাতে ত্রিপুরার মাদক কারবারীর সমস্ত তথ্য উঠে এসেছে। অপু রঞ্জন দাসের বিপুল পরিমাণ মাদক সামগ্রী বহিরাজ্যে আটক হওয়ার পর ত্রিপুরা রাজ্যে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দেশীয় স্তরে সমালোচনা শুরু হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর এই ঘটনায় কিছুটা চাপে পড়েছে ত্রিপুরা রাজ্য পুলিশ।