প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,,১৯ জুলাই,,
পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি অনুসরণ করতে চাইছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডক্টর মানিক সাহা ? ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১০০ শতাংশ পঞ্চায়েত দখলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর খুন এবং সন্ত্রাসের রাজনীতি নিয়ে ক্রমশ এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে শান্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে। অভিযোগ টিভির পর্দায় পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে এতদিন পশ্চিমবঙ্গে যেসব সন্ত্রাসের ছবি দেখা যেত এখন তাই দেখা যাচ্ছে ত্রিপুরার বুকে। খুন, বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া, পুলিশের সামনে বিরোধী দলের প্রার্থীদের উপর আক্রমণের মতো নগ্ন সন্ত্রাসের চিত্র ত্রিপুরার রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে রীতিমত কলঙ্কিত করছে বলে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক মহলে প্রতিক্রিয়া। জাতীয় স্তরে বিজেপি তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাসের সমালোচনা করে । অথচ বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রই যেন ভেসে উঠেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ইতিমধ্যেই বিরোধী দলের প্রার্থী খুন হয়েছেন। বিরোধীদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন চলছে হামলা হুজ্জতির ঘটনা। বিরোধীদলের কর্মী সমর্থকরা তো দূরের কথা খোদ ৭ বারের বিধায়ক কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য সুদীপ রায় বর্মন পর্যন্ত সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। প্রকাশ্যে পুলিশের সামনে এবং মিডিয়ার ক্যামেরার চোখে চোখ রেখেই রাজ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাস ঘটে চলছে। ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক সন্ত্রাসে রাজ্যের অধিকাংশ পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখলে নিয়ে নিয়েছে শাসকদল। রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই ধরনের সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহার নীরব ভূমিকায় হতাশাগ্রস্ত রয়েছেন শান্তি প্রিয় মানুষজন। অত্যন্ত সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহার ইমেজ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিদ্রুপ শুরু হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিলের অন্তিম দিনে ভয়াবহ রূপ দেখা গেছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে এদিন একযোগে সন্ত্রাস চলে। খোদ পশ্চিম জেলার ঢুকলিতে মনোনয়ন দাখিল করতে গিয়ে সন্ত্রাসের মুখে পড়েন বামফ্রন্টের প্রার্থী সহ নেতৃত্ব। দিনভর চেষ্টার পরও তারা মনোনয়ন দাখিল করতে পারেননি। উদয়পুর টেপানিয়াতে মনোনয়ন দাখিল করতে গিয়ে আক্রান্ত হন সুদীপ রায় বর্মনের নেতৃত্বে কংগ্রেস প্রার্থীরা। সেখানে বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মনসহ বহু সংখ্যক কংগ্রেস কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন বলে খবর। রাতে কৈলাশহর সহ বিভিন্ন স্থানে একই ধরনের সন্ত্রাসের অভিযোগ রয়েছে।
সব জায়গাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। কিন্তু তারপরও পুলিশ কোথাও কোনো ভূমিকা নেয়নি। বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের মধ্যে পড়ে আহত হয়েছেন পুলিশ এবং টি এস আরের এক দুজন কর্মী। দিনের শেষে অনেক জায়গাতেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের শেষ দিন পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করতে পারেননি বিরোধী দলের প্রার্থীরা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতোই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পঞ্চায়েত গুলিতে ১০০ শতাংশ জয় পেয়ে গেছে শাসকদল।