প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,,ধর্মনগর,,৩ নভেম্বর,,
কালীপূজা এবং দীপাবলি উৎসবে এবার নতুন কলঙ্ক তৈরি করল উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগর শহরের পূর্ব বাজার স্থিত মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাব। অভিযোগ ক্লাবে পূজা দেখতে গেলে ক্লাব সদস্যরা এক পরিবারের পুরুষ ,মহিলা সদস্যদের গণহারে পিটিয়েছেন। এমনকি ক্লাবের কয়েকজন সদস্য নৃশংসভাবে নিজের কোমরের বেল্ট খুলে পুরুষ এবং মহিলাকে মাটিতে ফেলে নির্যাতন করেছেন। পূজা উদ্যোক্তা ক্লাব সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা। ঘটনা জানাজানি হতেই ধর্মনগর সহ গোটা রাজ্যে জুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। অভিযুক্ত ক্লাবের পূজা বন্ধ করার সহ এই ক্লাবকে বয়কটের ডাক তুলে প্রতিবাদের সোচ্চার হয়েছেন নাগরিক মহলের একাংশ।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় শনিবার রাত বারোটা নাগাদ কালি পূজো দেখতে গিয়ে ধর্মনগর শহরের পূর্ব বাজার স্থিত মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাব সদস্যদের হাতে গুরুতর ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন দুই দম্পতি। পরে দমকলকর্মীরা পুরুষ মহিলা সহ আহতদের উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। শনিবার রাতে সেই ক্লাবে পূজা দেখতে গিয়েছিলেন দক্ষিণ হুরুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নির্মল মালাকার, তার ছোট ভাই নিখিল মালাকার সহ তাদের পরিবারের মহিলা এবং বাচ্চারা। বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে পূজা দেখে শহরের পূর্ব বাজার স্থিত মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবে পূজো দেখতে যান তারা। সেখানে দর্শনার্থীদের প্রচন্ড ভিড় ছিল। পূজা উদ্যোক্তাদের নিয়ম মেনে তারা উভয় পরিবারের মহিলা এবং পুরুষ সদস্যরা আলাদাভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। তাদের পরিবারের ছোট বাচ্চাকে ক্লাব কর্তৃপক্ষ লাইন থেকে ছেড়ে ক্লাবের ভেতরের পূজো দেখতে ছাড় দেয়। কিন্তু ছোট বাচ্চা একা কি করে পূজা দেখবে তার জন্য নির্মল মালাকার ক্লাব কর্তৃপক্ষকে ছোট বাচ্চার সাথে একজন মহিলাকে ছাড় দিতে আবেদন করেন। এই নিয়েই প্রথমে ক্লাব কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এর মধ্যেই ক্লাবের কয়েকজন নির্মল মালাকারকে মারতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। কিল খুশির পাশাপাশি বাঁশ এবং রড নিয়ে ক্লাবের কয়েকজন সদস্য তাঁর ওপর হামলা করে বলে অভিযোগ। নির্মল মালাকারকে বাঁচাতে গেলে তার ছোট ভাই নিখিল মালাকার এবং সেখানে উপস্থিত পরিবারের মহিলা সদস্যরা ক্লাব সদস্যদের হামলার শিকার হন। অভিযোগ ক্লাবের কয়েকজন নিজেদের কোমরের বেল্ট খুলে মহিলা সদস্যদের মাটিতে ফেলে পিটিয়েছে। ক্লাব সদস্যদের সঙ্গবদ্ধ হামলায় তারা সেখানে গুরুতর আহত হন। অভিযোগ ১৫-২০ জন ক্লাব সদস্য তাদের উপর একসঙ্গে হামলা করেছিল। আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা কোনক্রমে সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী নবরুপ সংঘের পূজো মন্ডপে গিয়ে সেখানকার পূজা উদ্যোক্তাদের সাহায্য নেন। পরে সেখানে উপস্থিত লোকজন ধর্মনগর দমকল বিভাগে খবর জানান। দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার খবর পেয়ে ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা,ধর্মনগর থানার ওসি হিমাদ্রী সরকার বিশাল পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী নিয়ে মার্চেন্ট স্পোর্টিং ক্লাবে যান এবং পূজার অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। প্রসঙ্গত এভাবে পূজা উদ্যোক্তাদের হাতে দর্শনার্থীদের উপর আক্রমণের ঘটনা রাজ্যে রীতিমতো নজিরবিহীন। অভিযুক্ত ক্লাব কর্তৃপক্ষ এবং সদস্যদের বিরুদ্ধে করা শাস্তির দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে