প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১৯ জুলাই,,
“ত্রিপুরায় প্রতিদিন গণতন্ত্র হত্যা হচ্ছে। সমাজের মধ্যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করে ত্রিপুরাকে দ্বিতীয় মনিপুর বানাতে চাইছে ভাজপা।” গন্ডাছড়ায় সামাজিক হিংসার ঘটনা সহ রাজ্যের রাজনৈতিক সন্ত্রাস নিয়ে দুদিন ব্যাপী খোঁজখবর নেয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাংসদ প্রতিনিধি দলের। গত ১২ জুলাই ত্রিপুরার গন্ডাছড়াতে সামাজিক হিংসার ঘটনা ঘটে । সেখানে এক জনজাতি যুবকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট অংশের বাড়িঘর গণহারে লুটপাট করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী ১২ জুলাই রাতের ঘটনায় গন্ডাছড়ায় ১৬৫ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়াও পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যের প্রতিদিন সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে। কংগ্রেস নেতাকর্মীদের বাড়িঘর আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া সহ ত্রিপুরার রাজনৈতিক সন্ত্রাসে খুন হয়েছেন সিপিআইএম প্রার্থী। আক্রান্ত হয়েছেন কংগ্রেস নেতা সুদীপ রায় বর্মন। ত্রিপুরার এসব হিংসার ঘটনার খবর নেওয়ার জন্য ১৬ জুলাই সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপাল দুই সংসদ সদস্যকে ত্রিপুরায় দুদিনের সফরে আসার নির্দেশ করেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় আসেন কংগ্রেস সাংসদ তারিক আনোয়ার এবং গৌরব গগৈ। দুদিন যাবত তারা ত্রিপুরার কংগ্রেস নেতাদের সাথে কথা বলে ত্রিপুরার হিংসার ঘটনার খবর নেন। তারা চেয়েছিলেন গন্ডাছড়ায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলার। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে গন্ডাছড়ায় যেতে অনুমতি দেয়নি। গণ্ডাছড়া সহ রাজ্যের বিভিন্ন হিংসার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশনে মিলিত হন কংগ্রেস নেতৃত্ব।
শুক্রবার সকালে কংগ্রেস প্রতিনিধি দল বিশালগড় আক্রান্ত কংগ্রেস নেতা টিটু আহমেদের বাড়িতে যান। সেখানে তারা রাজনৈতিক হিংসার ঘটনার খবর নেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন।
পরবর্তীকালে কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হয়ে কংগ্রেস সংসদরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব বলেন ত্রিপুরায় এখন আইনের শাসন নেই । প্রধানমন্ত্রী বলেছেন ভারতবর্ষে এখন ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ রয়েছে। কিন্তু ত্রিপুরাতে দেখা যাচ্ছে ‘মার্ডার অফ ডেমোক্রেসি’ হচ্ছে। ত্রিপুরাকে পরিকল্পিতভাবে ভাজপা দ্বিতীয় মনিপুর বানানোর চেষ্টা করছে বলে কংগ্রেস সাংসদরা সন্দেহ প্রকাশ করেন। একইভাবে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গণতন্ত্র রক্ষায় রাজ্য কংগ্রেস কর্মীরা যেভাবে ভয়কে তুচ্ছ করে মানুষের স্বার্থে কাজ করছেন তার ভূয়সি প্রশংসা করেন। ত্রিপুরার কংগ্রেস কর্মীদের একেকজনকে ‘বাঘের’ সাথে তুলনা করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। সংসদ প্রতিনিধি দল জানান ত্রিপুরার রিপোর্ট তারা দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ সাংসদ রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধীর কাছে জমা করবেন। একইভাবে আগামী দিনে সংসদ অধিবেশনে ত্রিপুরার সন্ত্রাসের চিত্র তুলে ধরা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।