প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, বিশালগড়,, ১৮ মে,,
হীরার রাজ্য ত্রিপুরায় মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা। রাজ্য সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে একাধিক লোকের মৃত্যু ঘটছে। হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পরপর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দুই যুবকের। সাত সকালে বিশালগড় গোলাঘাটি এলাকায় কুকুরের প্রাণ বাঁচাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক অটো চালকের। মৃত অটো চালকের নাম জীবনচন্দ্র শীল (৩৫)।
একই দিনে জাতীয় সড়কের সূর্য্যমনিনগর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হল এক বাইক চালকের। মৃত বাইক চালকের নাম সম্রাট ওরাং। সম্রাট ওরাং সকালে নিজের বাইক নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল। আমতলী থানাধীন সূর্য মনি নগর আসতেই জাতীয় সড়কের উপর একটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী বাস প্রথমে তার বাইকে ধাক্কা দেয়। সম্রাট ওরাং বাইক থেকে পড়ে গেলে বাসের পেছনের টাকা সম্রাটের মাথার উপর দিয়ে চলে যায়।

এত করে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাসের চাকার নিচে সম্রাটের মাথা পিষ্ট হয়ে সেই দুর্ঘটনার দৃশ্য এতটাই বীভৎস ছিল যে প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে কয়েকজন তা দেখেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে থানার পুলিশ গিয়ে তড়িঘড়ি পুলিশের গাড়িতে করেই মৃতদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। দুর্ঘটনায় আকস্মিক প্রয়াণের ফলে উভয় পরিবারসহ তাদের পরিজনদের মধ্যে শোক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও ঐদিন বিকাল পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আরও একাধিক দুর্ঘটনায় হতাহতের খবর রয়েছে। প্রসঙ্গত বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে রাজ্যকে “হীরা” অর্থাৎ হাইওয়ে, ইন্টারনেট, রেলওয়ে এবং এয়ারওয়ে বিশেষভাবে উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই “হীরা” মডেলের রাজ্য ‘হাইওয়ে’ এবং ‘স্টেটওয়ে’ সহ সমস্ত সড়কে পরিবহন ব্যবস্থা এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। হীরা মডেলের রাস্তায় রাজ্যে প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনার পর আহতদের সঠিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া কিংবা হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রয়োজনীয় আপৎকালীন চিকিৎসার ব্যবস্থা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না রাজ্যে। দুর্ঘটনার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে সঠিক স্বাস্থ্য পরিষেবার অভাবে প্রাণ হারাতে হচ্ছে অনেককে। গত এক সপ্তাহে রাজ্যে ৮ জনের বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় রাজ্যের মৃত্যুর সংখ্যার হার উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। কেন সেই দুর্ঘটনা ঘটছে এবং সেগুলি থেকে কিভাবে নিস্তার পাওয়া যায় এনিয়ে রাজ্য সরকারের কোন সঠিক পদক্ষেপ নেই বলে রাস্তায় চলাফেরা করতে আতঙ্কে ভুগছেন নাগরিক মহল।