সংবাদ প্রতিনিধি,, আগরতলা,,২৬জুন,,,
রাজধানীতে বেপরোয়া যান চলাচল এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যু এড়াতে কঠোর হাতে মাঠে নেমেছেন ট্রাফিক পুলিশ সুপার মানিক দাস। মানিক দাসের নেতৃত্বে ট্রাফিক পুলিশ রাজধানীতে বেআইনি পার্কিং বন্ধে চালকদের সতর্ক করতে ” সড়ক সুরক্ষা, জীবন রক্ষা” নামক বিশেষ প্রচার অভিযান শুরু করেছে। রবিবার ২৫ জুন থেকে শুরু হয়ে আগামী ১২ আগস্ট পর্যন্ত এই প্রচার অভিযান চলবে।

প্রচার অভিযানের পর যান চালকরা নিজে থেকে সতর্ক না হলে শহরে শুরু হবে ট্রাফিকের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। বেআইনি পার্কিংয়ের জন্য শহর থেকে তুলে নেওয়া হবে যানবাহন। একই ঘটনা একাধিকবার পুনরাবৃত্তিতে বাতিল করা হতে পারে যানচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স। ট্রাফিক পুলিশের এই কড়া মনোভাবের কথা জানিয়েছেন ট্রাফিক পুলিশ সুপার মানিক দাস। রবিবার জিবি বাজার চত্বরে ট্রাফিক পুলিশের উদ্যোগে এই ধরনের একটি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ট্রাফিক পুলিশ সুপার মানিক দাস। ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের সহকারী কমিশনার, এনসিসির এসডিপিও , জিবি হাসপাতালের মেডিকেল সুপার, বাজার কমিটি এবং বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তারা।
এই আলোচনা সভায় রাজ্যের প্রধান জিবি হাসপাতালে প্রবেশ পথে জিবি বাজারে যানবাহন চলাচল এবং পার্কিং নিয়ে বিশেষভাবে নাগরিকদের সতর্ক করা হয়। ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিকরা রোড ম্যাপিং করে উপস্থিত সবাইকে বুঝিয়ে দেন জিবি বাজারের মূল গোল চক্করের চারদিকই নো পার্কিং জোন। ব্লাড ব্যাংকের সামনে কিংবা ওষুধের দোকানগুলোর সামনে যানবাহন রাখলে তা বেআইনি হিসেবে ধরে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে গোল চক্কর থেকে শ্যামলী বাজারের দিকে যেতে রাস্তার বাঁদিকে পাবলিক টয়লেটে এলাকায় এবং বিটি কলেজের দিকে যেতে রাস্তার দুই পাশে নির্দিষ্ট স্থানে পার্কিং করা যাবে।
ইমারজেন্সি রোড হিসেবে পরিচিত জিবি বাজারের চারদিকে বেআইনিভাবে পার্কিংয়ের জন্য আপাতকালীন পরিস্থিতিতে কি ধরনের অসুবিধা হয় তা নিয়ে নাগরিকদের সচেতন করা হয়েছে এদিন। তাছাড়া আগামী দিনে রাধানগর মোটর স্ট্যান্ড, দুর্গা চৌমনি, মঠ চৌমনি সহ রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক গুলিতে যান চালকদের সতর্ক করতে এ ধরনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ট্রাফিক পুলিশ সুপার মানিক দাস জানান প্রথম অবস্থায় শহরের যানজট এড়াতে এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা মসৃণ করতে আলোচনায় সভায় ডেকে নাগরিকদের সতর্ক করা হবে। কিন্তু এরপরও যে সমস্ত যান চালকরা বেআইনিভাবে রাস্তার যত্রতত্র পার্কিং করবেন তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেআইনি পার্কিংয়ের জন্য শহর থেকে জব্দ করা হবে যানবাহন। তাছাড়া শহরে বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যাল গুলোর সামনে স্টপ সিগন্যালে যেসব যান চালক লাইন ভেঙে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধেও সারভিলেন্স ক্যামেরার মাধ্যমে কঠিন নজরদারি রয়েছে ট্রাফিক পুলিশের। এসপি মানিক দাস আরো জানান রাজধানীতে ট্রাফিক নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য প্রতিদিন প্রায় এক হাজার যানবাহনের বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যু করা হচ্ছে। অনেকে নিয়ম ভেঙ্গে শহরে চলাফেরা করছেন। ট্রাফিক পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে তারা ভাবছেন পার পেয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু ট্রাফিক সিগন্যালের পাশে থাকা সারভিলেন্স ক্যামেরা থেকে নিয়মিত সেইসব যান চালকদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের কাছে আইনি নোটিশ পৌঁছে যাবে এবং নিয়ম মেনে তাদেরকে ফাইন করতে হবে। সব মিলিয়ে রাজধানীতে বেপরোয়া যান চলাচলের বন্ধ করে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত এবং সুশৃংখল করতে উদ্যোগ নিয়েছেন পুলিশ সুপার মানিক দাস। পুলিশ সুপারের এই উদ্যোগ বাস্তবে কতটা কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে তাই দেখার বিষয়।