প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,,২ সেপ্টেম্বর,,
রাজধানী আগরতলায় দিন দুপুরে বর্বর নির্যাতনের শিকার হলেন এক মহিলা সহ তার দুই নাবালিকা। এক ব্যবসায়ী নেতৃত্বে একদল মহিলা নির্যাতিতার বাড়িতে ঢুকে দিনের আলোতে তাকে নগ্ন করে প্রচন্ডভাবে মারধর করে। মহিলাকে নগ্ন করে নির্যাতন করার সময় সেই ঘটনার ভিডিও তৈরি করে রেখে দেওয়া হয়। ছিনিয়ে নেওয়া হয় মহিলার গলার হার সহ তার দামি মোবাইল ফোন। হুমকি দেওয়া হয় এই ঘটনায় পুলিশের অভিযোগ করলে মহিলার নগ্ন ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল করা হবে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ করেছেন রাজধানীর রামনগরের এক গৃহবধূ।
নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ গত ২ আগস্ট সকাল ৯ টার পর তাঁর রামনগর বাড়িতে ঢুকে একদল মহিলা এই হামলা সংগঠিত করে। হামলার নেতৃত্বে ছিলেন বর্ডার গোল চক্কর এলাকার ব্যবসায়ী অসিত। অভিযোগ অসিত নিচের দোকানে বাংলাদেশীদের আশ্রয় দেওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত। অসিতের সাথে মহিলার (নির্যাতিতার)একসময়ে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। মহিলা সেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে অসীত মহিলার উপর নির্যাতন শুরু করেন। প্রথমে চলে নানা ধরনের ভিডিও ,ছবি এবং ভয়েস রেকর্ড পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেলিং। তারপরেই কয়েকজন মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে সেই বর্বর হামলা সংগঠিত হয়। নির্যাতিতা ঘটনার দিন সন্ধ্যায় পশ্চিম মহিলা থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মহিলা পুলিশ অভিযুক্তদের কাউকে গ্রেফতার করেনি। রাজধানীর বুকে বাড়িতে ঢুকে শ্লীলতাহানি এবং নির্যাতনের ঘটনার প্রায় এক মাস বাদেও পশ্চিম মহিলা থানার পুলিশ সেই ঘটনায় সাধারণ কিছু ধারায় শুধুমাত্র মামলা নিয়ে দায়িত্ব খালাস করে দিয়েছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িতদের কাছ থেকে মহিলার নগ্ন নির্যাতনের ভিডিও সংগ্রহ করে ডিলিট করা কিংবা ছিনতাই করা মহিলার হার মোবাইল ফোন উদ্ধার করার কোন তৎপরতা দেখাচ্ছে না। ভয়ানক নির্যাতনের শিকার হওয়ার পরও নির্যাতিতা এখনও ন্যায্য বিচার পায়নি বলে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন নাগরিক মহলে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে এই ঘটনায় রাজনৈতিকভাবে প্রতিবাদের ঝড় উঠতে পারে বলে খবর রয়েছে। প্রসঙ্গত সিপিআইএম জমানায় আগরতলা চন্দ্রপুর টাটা কালিবাড়ি এলাকায় এক গৃহবধূকে এভাবেই অমানবিক নির্যাতন করেছিলেন একদল মহিলা। সেই ঘটনায় রাজ্য ব্যাপী তীব্র প্রতিবাদ তৈরি হয়। পুলিশ প্রথমে ভূমিকা না নিলেও পরে আদালতের চাপের মুখে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে গারদে ঢুকিয়েছিল। সেই সময় সেই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মাঠ গরম করেছিল বর্তমান সময়ের শাসকদল বিজেপি। রাজ্যে ২০১৮ সালে ক্ষমতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে অন্যতম কারণগুলি ছিল তার মধ্যে একটি ছিল নারী নির্যাতন এবং টাটা কালিবাড়ি কান্ড। টাটা কালীবাড়ি কান্ডে সেই নির্যাতিতা মহিলা আজকের দিনে সমাজের প্রথম সারিতে রয়েছেন এবং একজন জনপ্রতিনিধি। অথচ বর্তমান বিজেপি শাসনে আগরতলার বুকে এর থেকেও বেশি ভয়ানক বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে নির্যাতিতা বিচার পাচ্ছেন না। ঘটনায় শাসকদল সহ বর্তমান সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
