প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ৪ আগস্ট,,
জনজাতি যুবকের মৃত্যুর জের ধরে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত গন্ডাতুইসা তথা গন্ডাছড়ায় এবার আর্থিক সহায়তার রীতিমত বন্যা বইয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহা। ১২ জুলাই হামলার ঘটনার পর ৪ আগস্ট রবিবার গন্ডাছড়া সফরে গিয়ে মোট ২৪২ কোটি ৫৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে ৩ কোটি ৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে মৃত পরমেশ্বর রিয়াং এবং হামলার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪২ পরিবারের লোকেদের মধ্যে। অন্যদিকে গন্ডাছড়া মহকুমায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য খরচ করা হবে ২৩৯কোটি ১০ লক্ষ টাকা। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর এদিন গন্ডাছড়ায় গিয়ে ২৪২ কোটি ৫৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকার আর্থিক প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে গন্ডাছড়া সফর করেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মুখ্য সচিব জিতেন্দ্র কুমার সিনহা, পুলিশ মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন, স্বরাষ্ট্র সচিব প্রদীপ চক্রবর্তী সহ রাজস্ব দপ্তর, পূর্ত দপ্তর সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মৃত পরমেশ্বর রিয়াং এর পরিবারের সাথে দেখা করেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়নপুর বাজার পরিদর্শন করেন এবং গন্ডাছড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় শরণার্থী শিবিরে যান। সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ৭ জুলাই আনন্দ মেলাতে পরমেশ্বর রিয়াং আহত হয়েছিল এবং পরবর্তীকালে তাঁর মৃত্যু হয় জিবি হাসপাতালে। এরপরেই ১২ জুলাই রাতে গন্ডাছড়ার বিভিন্ন স্থানে বাড়িঘরে হামলা হয়। সেই ঘটনায় ১৪২ পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর বিবরণ। পরমেশ্বর রিয়াং এর পরিবারে ইতিপূর্বে ৬ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরো ৪ লক্ষ টাকা বাড়িয়ে পরমেশ্বরের পরিবারে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন । সেই সাথে ক্ষতির পরিমাণ হিসেবে ক্ষতিগ্রস্ত ১৪২ পরিবারে ইতিপূর্বের আর্থিক সাহায্য সহ সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেন।
এলাকার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ৩৩ কেভি এবং ৩০ কার্ড এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর স্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করার ঘোষণা দেন মুখ্যমন্ত্রী। একইভাবে ১২ জুলাই রাতে ক্ষতিগ্রস্ত নারায়ণপুর বাজারে ৩০ টি দোকান বিশিষ্ট নতুন মার্কেট স্টল নির্মাণের ঘোষণা দেন। পাশাপাশি গন্ডাছড়া বাজারে সিসি ক্যামেরা লাগানো থেকে শুরু করে হাসপাতাল উন্নয়ন, স্কুল উন্নয়ন, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, সিনথেটিক খেলার মাঠ, কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার তৈরি করা সহ মহকুমার সার্বিক উন্নয়ন খাতে ২৩৯ কোটি ১০ লক্ষ টাকার আর্থিক খরচের ঘোষণা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় জড়িতদের প্রসঙ্গে সরাসরি কোন অভিযোগ না তুললেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন যারাই অশান্তি তৈরি করতে চাইছে এবং চক্রান্ত করছে তাদের সনাক্ত করে আইনত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। সাংবাদিক সম্মেলনের শেষ দিকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন “শান্তি ছাড়া রাজ্য এবং দেশ এগিয়ে যেতে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সব সময় বলেন সবকা সাথ, সবকা বিকাশ সবকা বিশ্বাস, আর তার প্রয়াস। সেই দিশাতেই আমরা চলতে চাই।”
Recent Comments