প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, বিশালগড়,, ১১ মে,,
“ঝড়ে বক মরে ,ফকিরের কেরামতি বাড়ে”,, গ্রাম বাংলার সেই প্রবাদের বাস্তবতা দেখা গেল শনিবার বিশালগড়ে। এদিন সড়ক দুর্ঘটনায় পর নাগরিকদের হাতে ধরা পড়ল প্রায় দেড় কোটি টাকার বাউন্ড সুগার। দুর্ঘটনার সুযোগে পাওয়া ব্রাউন সুগারকে সামনে রেখে নিজেদের বড়াই করলেন সিপাহীজলা জেলা পুলিশের একাংশ কর্মকর্তা। ঘটনার বিবরণে জানা যায় চড়িলাম পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় শনিবার বিকেলে একটি যান দুর্ঘটনা ঘটে। দ্রুতগতির একটি বাইক এবং চার চাকার অটোর সংঘর্ষে বাইকে থাকা দুই যুবক রাস্তার পাশে ছিটকে পড়েন। আহত হন অটো চালকও । সেই দুর্ঘটনার কবলে পড়া বাইকে থাকা দুই যুবকদের কাছেই ছিল প্রায় দেড় কোটি টাকার ব্রাউন সুগার। দুর্ঘটনার পর যুবকদের সঙ্গে থাকা ব্রাউন সুগারের প্যাকেট রাস্তার উপর ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আহতদের উদ্ধার করতে গেলে রাস্তার উপর ব্রাউন সুগারের প্যাকেট পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর জানানো হয় পুলিশের কাছে।
খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলের দুই পাশে থাকা পুলিশ নাকা থেকে বিশালগড় থানার পুলিশ এবং চড়িলাম থানার পুলিশ সেখানে ছুটে যায়। কিন্তু পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই বাইকে থাকা এক মাদক কারবারি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গায়েব হয়ে যায় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ব্রাউন সুগার। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার ব্রাউন সুগার উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ব্রাউন সুগার সহ কবির উদ্দিন নামে সেই বাইকের এক আরোহী যুবককে গ্রেফতার করেছে। কবির উদ্দিনের বাড়ি যাত্রাপুর থানা এলাকার বড় নারায়ন। বাইকে থাকা আবু তাহের নামে আরেকজন সেখান থেকে পালিয়ে যায় বলে খবর। এমনকি ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার ব্রাউন সুগার গায়েব হয়ে গেছে বলেও স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি। বিশালগড় থানার পুলিশ এই ব্রাউন সুগার উদ্ধারের পর জেলা পুলিশ সুপারকে খবর জানান । কোটি টাকার ব্রাউন সুগার উদ্ধারের খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার জগদীশ রেড্ডি দৌড়ে চলে আসেন বিশালগড় থানায়। পুলিশ সুপার এবং থানা পুলিশ এই মাদক উদ্ধারের ঘটনাকে নিজেদের সাফল্য বলে জাহির করার চেষ্টা করেন। যদিও বাস্তব ঘটনা অন্যরকম। জানা গেছে মাদক কারবারীরা আগরতলা থেকে মাদক নিয়ে একাধিক পুলিশ নাকা পয়েন্ট পার হয়ে সোনামুড়া যাচ্ছিল। রহস্যজনকভাবে পুলিশ প্রত্যেকটি নাকা পয়েন্টে মাদক কারবারীদের ছেড়ে দিয়েছিল। এমনকি বিশালগড় উত্তমভক্ত চৌমুহনীতে থাকা পুলিশ নাকা পয়েন্টেও পুলিশ তাদেরকে আটক করেনি। সেই নাকা পয়েন্ট পার হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর মাদক কারবারীরা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং প্রত্যক্ষদর্শী নাগরিকদের মদতে মাদক সামগ্রী উদ্ধার হয়। মাদক কারবারীরা বাইক নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে না পড়লে কোনভাবেই এই মাদক সামগ্রী পুলিশের হাত লাগতো না। অভিযোগ পুলিশের মদতেই এই কোটি টাকার মাদক সামগ্রী আগরতলা থেকে সোনামুড়া পাচার হচ্ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনা এবং নাগরিকদের সচেতনতায় সেই মাদক ধরা পড়ে যায়। মাদক উদ্ধারের পর এবার পুলিশ বিষয়টিকে সামনে তুলে নিজেদের ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা করছেন। পুলিশের এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন,,”ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ে।”
Recent Comments