প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১৫ জুলাই,,
“এই এসপির যোগ্যতা নেই ! উর্দি খুলে আমাদেরকে দিয়ে দিন। আমরা আপনাদের সুরক্ষা দেবো।” গন্ডাছড়ায় হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক মহিলা সোমবার এভাবেই পুলিশ সুপারের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন জেলাশাসকের সামনে। অভিযোগ শুক্রবার রাতের ভয়াবহ সন্ত্রাসের সময় পুলিশ তাদের বাড়িঘর রক্ষা করার কোন ভূমিকা নেয়নি। জনজাতি যুবকের মৃত্যুর প্রতিবাদে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে তা আগেই জানা ছিল পুলিশ প্রশাসনের। মহাকুমা প্রশাসনের তরফে দুপুরের পর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় নাগরিকদের। কিন্তু পরবর্তীকালে সন্ত্রাস শুরু হওয়ার পর দেখা গেছে সবই ছিল ঠুনকো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সন্ধ্যার পর যখন গণহারে বাড়িঘর পুড়ানো শুরু হয়, লুটপাট হয় তখন পুলিশ প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। বরং অনেক পুলিশ এবং নিরাপত্তা রক্ষী সেই সব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে দিয়েছেন। পুলিশ প্রশাসনের এই ভূমিকায় ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিক মহল প্রচন্ড ক্ষুব্ধ রয়েছেন। সোমবার প্রশাসনের আধিকারিকদের সামনে পেয়ে নাগরিকরা সেই ক্ষোভ জাহির করেন।
জেলাশাসক আইএএস সাজু ওয়াহিদ এবং জেলা পুলিশ সুপার আইপিএস অবিনাশ রাই ক্ষুব্ধ নাগরিকদের বুঝানোর চেষ্টা করেন। জেলা শাসক তাদেরকে সরকারি সাহায্য সহ নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের এক মহিলা সেখানে রূঢ় কন্ঠে প্রতিবাদে সোচ্চার হোন। তিনি জেলাশাসককে উদ্দেশ্য করে জেলা পুলিশ সুপারকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে অস্পষ্ট হিন্দিতে পুলিশ সুপারকে “অযোগ্য” বলে দাবি করেন। পুলিশ সুপারের উর্দি খুলে তার দায়িত্ব নাগরিকদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি তোলেন। তিনি দাবি তুলেন এইসব পুলিশ কর্মীদের চাকরি থেকে ছাটাই করার। প্রতিবাদী মহিলার কন্ঠে এইসব কথা শুনে জেলা পুলিশ সুপারকে অনেকটাই ইতস্তত থাকতে দেখা গেছে। যদিও পরবর্তীকালে উপস্থিত কয়েকজন জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারকে তাদের মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে সম্মান আচরণে নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। অন্যদিকে জেলা শাসক সাজু ওয়াহিদ বলেন গন্ডাছড়ার পরিবেশ এখন সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতির হিসেব করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। একইভাবে জেলাশাসক বলেন এই সন্ত্রাসের ঘটনায় কেউ পরিকল্পিতভাবে জড়িত থাকলে তাকে সনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Recent Comments