প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ২২ আগস্ট,,
চারদিনের বন্যায় ত্রিপুরাতে এখনো পর্যন্ত প্রায় ২০ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে। নিখোঁজ এবং ক্ষয়ক্ষতির হিসেবে অগণিত। গত ২৪ ঘন্টায় ধ্বস পড়ে বিলোনিয়া বিধানসভায় মৃত্যু হয়েছে ২ পরিবারের ৭ জনের। তাদের মধ্যে ৬ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। রাস্তা খারাপ থাকায় খবর লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল সেখানে পৌঁছাতে পারেনি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন উমাচরণ ত্রিপুরা (২৫) ,মন্দিরা ত্রিপুরা ( ২৩ ) অপর পরিবারের সদস্য প্রসেনজিৎ ত্রিপুরা ( ২১ ), অজয় ত্রিপুরা ( ১৬ ),রাকেশ ত্রিপুরা ( ১৮) জ্যোতিকা ত্রিপুরা (২১) ও কুমতুইসা ত্রিপুরা (৩)।
এছাড়াও পশ্চিম জেলা জিরানিয়া এবং সিপাহীজলার সোনামুড়াতে বন্যা কবলিত এলাকায় পৃথক পৃথকভাবে ২ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে। শান্তির বাজার বিধানসভার বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং-র সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে ২০ আগস্ট উনার বিধানসভা কেন্দ্রে ধ্বস পড়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত কালকে রাতে শান্তিরবাজার বর্ডার এলাকা তথা বিলোনিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে দুই পরিবারের ৭জন ধ্বস পড়ে মারা গেছেন। রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত থাকায় খবর লেখা পর্যন্ত সেখানে বিধায়কের কিংবা প্রশাসনের কোন দল পৌঁছাতে পারেনি। শান্তির বাজার মহকুমায় পাঁচটি বুলডোজার বিভিন্ন স্থানে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করছে বলে বিধায়কের জানিয়েছেন। গত ২৪ ঘন্টায় বন্যার কারণে মোট ১০ জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে।
১৯ আগস্ট থেকে ত্রিপুরাতে মুষলধারায় বৃষ্টিতে সমস্ত নদীগুলোর জলস্থর বেড়ে যায় এবং ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। গত চার দিন যাবত বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাজ থেকে পাওয়া বুধবার দুপুরের তথ্য অনুযায়ী বন্যার কারণে ৭ জনের বেশি মৃত্যু হয়েছিল। নিখোঁজ ছিলেন দুইজন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষনার কিছুক্ষণের মধ্যেই চড়িলামে এবং চাকমাঘাটে এলাকায় ভূমিধ্বসে আরো দুজনের মৃত্যুর খবর আসে। বুধবার রাতে ফের শান্তির বাজারের গার্দাং এলাকায় ভূমিধ্বসে আরো ৭জনের মৃত্যুর খবর রয়েছে। একইভাবে পশ্চিম জেলার জিরানীয়াতে গৃহপালিত গরু বাঁচাতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে শান্তি দেববর্মা(৬৫) নামে একজনের। পাশাপাশি সোনামুড়া এলাকায় বন্যার জলে মাসে ধরতে গিয়ে সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ২৪ বছরের যুবক মৃদুল দাসের।

সব মিলিয়ে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত চার দিনে বন্যার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ২০ জন। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই, দুর্গতদের মোবাইল ফোনে চার্জ নেই। কিছু কিছু এলাকায় সাধারণ মানুষজন প্রশাসন এবং সংবাদমাধ্যমের সাথে এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছেন। ফলে ওই সমস্ত এলাকায় হতাহতের সংখ্যা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে জানা যাচ্ছে না। সূত্রের দাবি চার দিনের বন্যায় রাজ্যের মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাছাড়া এখনো রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমায় মানুষজন বন্যা কবলিত এলাকায় আটকে আছেন। জারি রয়েছে প্রশাসনের উদ্ধার কাজ। ত্রাণ শিবিরে এখনো পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজারের বেশি লোক আশ্রয় নিয়েছেন বলে সূত্রের দাবি।
Recent Comments