বিশেষ প্রতিনিধি,, ধর্মনগর,, ১ মার্চ,,
“ভানুপদ চক্রবর্তী” এই নামটি রাজ্য পুলিশের কাছে বেশ চর্চিত নাম। আইপিএস ভানুপদ চক্রবর্তী রাজ্য পুলিশের আধিকারিক এবং বর্তমানে উত্তর জেলার জেলা পুলিশ সুপার।কর্মজীবনে তিনি যেখানেই চাকুরী করেছেন সমাজদ্রোহী ও নেশা কারবারিদের আতঙ্ক হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। তাঁর চাকুরি জীবনে রয়েছে অসংখ্য রেকর্ডও। একাধিকবার তিনি রাষ্ট্রপতির পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাছাড়া উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ধাপে ধাপে আট বছর যাবৎ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে দুই দুবারের পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও রাজ্যের অনান্য প্রান্তে দক্ষতার সঙ্গে আপোসহীন কর্তব্য পালন করেছেন।
একজন দক্ষ পুলিশ সুপারের পাশপাশি তিনি একজন ভালো মানের কৃষকও। তিনি যেখানেই বদলি হয়ে গেছেন সেখানের সরকারি বাসভবনে বিভিন্ন শাক সব্জি,ফল মূল থেকে শুরু করে বাহারী ফুলের চাষ করেছেন। উত্তর জেলার পুলিশ সুপার হওয়ার পর কর্মজীবনের পাশাপাশি চন্দ্রপুর স্কুল সংলগ্ন পুরাতন জেলা পরিবহন দপ্তরের পাশে পুলিশ সুপারের সরকারি বাসভবনে বাহারী শাক সব্জি,ফল মূল ও ফুলের চাষ করে সবার নজর কেড়েছেন। পুলিশ সুপারের সরকারি বাসভবনে কৃষি জমিতে রয়েছে মিষ্টি কুমড়ো,পানি লাউ,গাজর, ফুল কপি,বাধা কপি,ওল কপি,উস্তে,বিভিন্ন ধরনের বেগুন,মরিচ, মটরশুঁটি,সিম, শশা,ধেরস ইত্যাদি।

ফল চাষে রয়েছে কমলা, ভুট্টা,আম,কাঠাল,আনারস, লিচু, তরমুজ ইত্যাদি এবং ফুলে রয়েছে বাহারি রঙের মেলা। কি নেই তার সরকারি বাসভবনে।এমনকি কিছু দিন পূর্বে তাঁর চাষ করা ফুল উত্তর জেলা ভিত্তিক ফুল প্রদর্শনীতে প্রথম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। পাশাপাশি শরীর চর্চার জন্য রয়েছে বেডমিন্টন ও সুইমিং পুলও। এক সাক্ষাৎকারে পুলিশ সুপার ভানুপদ চক্রবর্তী জানান, ত্রিপুরা রাজ্যের জলবায়ুতে সবধরনের সব্জি ও ফসল চাষ হয়,শুধু ইচ্ছা পরিশ্রম ও মানসিকতা থাকতে হয়। তিনি প্রতিদিন সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠে শরীর চর্চা করে ক্ষেতের মধ্যে কাজ করেন,কোন কোন সময় রাতেও ক্ষেতে কাজ করেন। যদি সব্জি,ফল মূল ও ফুলকে যত্ন নেওয়া যায়ও ভালোবাসা যায় তাহলে চাষ করা কোন ব্যাপারই না। তিনি বলেন,তাঁর সব্জি বা ফুলের জন্য কখনোই বাজারে যেতে হয় না। বারোমাস নিজের উৎপাদিত ফসল খান তিনি।তাই সকলের জন্য একটি বার্তা দেন,যেহেতু এখানের জলবায়ুটা ফসলের জন্য অনুকূল তাই সবাই যদি একটু পরিশ্রম করেন তাহলে যেকোন ফসল ফলানো সম্ভব।আর তাতে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকবে। পাশাপাশি যুবসমাজ যদি এধরনের কাজ কর্ম করে তাহলে তাদের মানসিকতা সুন্দর থাকবে। তিনি বলেন, তাঁর সব্জি ও ফসল দেখতে অনেক মানুষ আসেন, কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরাও আসেন। তাই তিনি সকলের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা রাখেন,যাদের কাছে খালি জমি পড়ে রয়েছে তাঁরা একটু চেষ্টা করলেই ভালো সব্জি ফল মূল ও ফুল চাষ করতে পারবেন।তাঁর সরকারি বাসভবনে তিনি এক ইঞ্চি জায়গাও খালি রাখেন নি।এক কথায় পুলিশ সুপারের কৃষি কাজের উপর এতো আগ্রহ যেকোন কৃষককেও হার মানাবে।
Recent Comments