প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১ মে,,
চাঞ্চল্যকর দুর্গা প্রসন্ন দেব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেফতার করলো এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ। ধৃতের তার নাম প্রদ্যুৎ চৌধুরী। প্রদ্যুৎ চৌধুরী উষা বাজার ভারতরত্ন সংঘ ক্লাবের পূর্বতন কমিটির সভাপতি ছিলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শালবাগান হাতিপাড়ায় ভারতরত্ন সংঘের বর্তমান সেক্রেটারি দুর্গা প্রসন্ন দেবকে গুলি করে হত্যার পর তদন্তে নেমে গভীর রাতে এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ প্রদ্যুৎ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে। প্রদ্যুৎ চৌধুরী বর্তমানে পশ্চিম থানায় রয়েছেন বলে জানা গেছে। এয়ারপোর্ট থানার পুলিশের কাছ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ সূত্রের দাবি প্রদ্যুৎ চৌধুরী খুনের মামলায় মুখ্য অভিযুক্ত রাজু বর্মন গ্রুপের সদস্য। যদিও পুলিশের এই দাবি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। একাংশের অভিযোগ পুলিশ তদন্তের শুরুতেই ‘আই ওয়াশ‘ করার খেলা শুরু করে দিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে মুখ্য অভিযুক্তদের পার পাইয়ে দিতে প্রাক্তন সভাপতিকে গ্রেপ্তার করে জনরোষ প্রশমিত করতে চাইছে। অভিযোগ খুনিদের সঙ্গে মিলে পুলিশ তদন্তের মোড় ঘোড়াতে চাইছে । পুলিশ প্রদ্যুৎ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করলেও মুখ্য অভিযুক্ত রাজু বর্মন কিংবা অন্যদের গ্রেফতার করেছে না। পুলিশ এই খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত পিস্তল উদ্ধারেও ব্যর্থ রয়েছে। পুলিশের এই ব্যর্থতা নিয়ে চাপা ক্ষোভ এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে উষা বাজার ভারতরত্ন সংঘ ক্লাব সদস্য এবং স্থানীয় নাগরিক মহলে। অন্যদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্রের দাবি এই খুনের ঘটনায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে বহিরাজ্যের পেশাদার সুপারি কিলার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। খুনের সময় পরিকল্পনাকারীরা দুর্গা প্রসন্ন দেবকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চারপাশ থেকে তাঁর উপর নজর রেখে চলছিল । শালবাগান হাতি পাড়াতে যেতেই সুপারি কিলার মুখ ঢেকে গিয়ে গুলি করে তাঁকে হত্যা করে। মৃত দুর্গা প্রসন্ন দেবের গাড়ি চালকের বিবরণ অনুযায়ী একজন মুখে গামছা বেঁধে গিয়েছিল। গাড়ি দাঁড় করিয়ে প্রথমে গাড়ির সামনে গিয়ে দুর্গা প্রসন্ন দেবকে ইশারায় ডাক দেয়। দুর্গা প্রসন্ন দেব গাড়ির দরজা খুলে বের হতেই তার উপরে পরপর তিন রাউন্ড গুলি করা হয়। গুলির আওয়াজ শুনে গাড়ি চালক পেছনে না তাকিয়ে গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে এয়ারপোর্ট থানাতে চলে যায়। অন্যদিকে কিলার দুর্গা প্রসন্নের মৃত্যু নিশ্চিত করে সেখান থেকে চলে যায়। সূত্রের দাবি পরপর তিনটি গুলি দুর্গা প্রসন্ন দেবের মাথায়, বুকে এবং হাতের মধ্যে লাগে।

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি এই খুন কাণ্ডে পেশাদার খুনিকে ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বহিরাজ্য থেকে সুপারি কিলার আনা হয়েছিল। একাংশ আরো দাবি করছেন শুটার রাতেই আগরতলা শহরের ভিআইপি জোনে বস্তির মধ্যে গাঢাকা দিয়ে ছিল। নিরাপদে সেই খুনি বস্তিতেই রাত কাটায়। সকালে রেল কিংবা বিমান পথে সে বহিরাজ্য পাড়ি দিয়েছে বলে একাংশের ধারণা। অভিযোগ জেলা পুলিশ থেকে শুরু করে থানা পুলিশ পর্যন্ত অনেকেই এই খুনের চক্রান্ত এবং খুনিদের নাম পরিচয় এবং বর্তমান অবস্থান নিয়ে অবগত রয়েছেন। কিন্তু তারা সঠিক পথে তদন্ত করে প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার না করে ঘটনার মোড় অন্যদিকে ঘুরাতে ব্যস্ত রয়েছেন। এই খুনের পেছনে উষা বাজার কেন্দ্রীয় পূর্ত দপ্তরের কোটি কোটি টাকার নিগো বাণিজ্য জড়িত রয়েছে তা রীতিমতো সবাই জেনে গেছেন। অভিযোগ সেই কোটি কোটি টাকার একটা অংশের লোভে পড়ে এখন পুরো খুন কান্ডকে চাপা দিয়ে প্রকৃত খুনিদের বাঁচানোর তাৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসনের একাংশ।
Recent Comments