বিশেষ প্রতিনিধি,, বক্সনগর,,১২আগষ্ঠ,,
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সোনামুড়া মহকুমাতে উপ নির্বাচন ঘোষণা হতেই সংখ্যালঘু নেতার ভিড় বেড়েছে শাসকদল বিজেপিতে। যে সমস্ত সংখ্যালঘু নেতারা বিভিন্ন অপবাদ এবং ষড়যন্ত্র কাটিয়ে ২০১৮ সালের বহু আগে থেকে বিজেপির রাষ্ট্রবাদী চিন্তার সঙ্গে একমত হয়ে পথ চলছেন তাদেরকে ডিঙিয়েই এখন টিকিটের জন্য লাফালাফি করছেন অনেক মৌলবাদী এবং জনবিচ্ছিন্ন নেতা। যদিও শাসক দল বিজেপি এখনো তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেনি। বিজেপি তাদের দলীয় কায়দা অনুসরণ করেই সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম এখনো সম্পূর্ণভাবে গোপন রেখেছে । ঘোষণা হওয়ার আগে নানা জনে নানা কথা বললেও ভাজপা কোন ভাগ্যবান নেতাকে দলীয় টিকেট দেবে তা এখনো কেউ নিশ্চিত বলতে পারছেন না। তবে সূত্রের দাবি সোনামুড়া মহকুমার ধনপুর এবং বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটি আসনে অতীতের ধারা অব্যাহত রেখেই সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে থেকে একজনকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। সূত্রের আরো দাবি ষাট শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রেই গতবারের নেই সংখ্যালঘু মুসলিম কাউকে প্রার্থী করতে চাইছেন ভাজপা নেতৃত্ব । কিন্তু কে হবেন সেই ভাগ্যবান প্রার্থী ? তা নিয়েই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী মহলে?
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য উপ নির্বাচনে শাসক দলের জয় প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক তথ্যবিজ্ঞ মহল। এক্ষেত্রে যাকেই প্রার্থী করা হবে তিনি আগামী দিনের নিশ্চিত বিধায়ক এবং সংখ্যালঘু প্রার্থীর ক্ষেত্রে নিশ্চিত মন্ত্রী হতে পারেন। এই নিশ্চিত মন্ত্রীর লোভে ভাজপা শিবিরে এখন সংখ্যালঘু নেতার ভিড় । তবে ভিড় বাড়লেই চলবে না। সূত্রের দাবি বিজেপির রাষ্ট্রবাদী চিন্তা ধারার অধিকারী হওয়ার পাশাপাশি, দলের পুরনো কর্মী, মজবুত জনসম্পর্ক সহ সামাজিক কর্মসূচির কথা মাথায় রেখেই প্রার্থী বাছাই করতে চলছেন ভাজপা নেতৃত্ব। এক্ষেত্রে ভাজপার প্রার্থী তালিকায় ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে দলের হয়ে বিজিত প্রার্থী বক্সনগর কেন্দ্রের ভূমিপুত্র তফাজ্জল হোসেনের নাম সর্বপ্রথম রয়েছে বলে খবরে রয়েছে।
তফাজ্জল হোসেন পেশাগতভাবে ঠিকেদার হলেও দীর্ঘ বছর যাবত তিনি বক্সনগর থেকে বাম বিরোধী রাজনীতির সাথে যুক্ত অন্যতম পরিচিত রাজনৈতিক মুখ। তিনি রাজ্যের অত্যন্ত পুরনো বিজেপি সংখ্যালঘু মুসলিম নেতাদের মধ্যে একজন। তফাজ্জল হোসেন বরাবরই সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত। তিনি নিজের চাল চলনে দাপুটে স্বভাবের হলেও এলাকার লোকেদের অসুবিধায় দল- মত ,ধর্ম -বর্ণ নির্বিশেষে তাদের সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বক্সনগরে যেকোন জাতের কিংবা সম্প্রদায়ের লোকের কাছে জনদরদী নেতা হিসেবে পরিচিত রয়েছেন তোফাজ্জল হোসেন। তিনি রাষ্ট্রভাষী চিন্তা ধারার লোক হিসেবে ভাজপার রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছেও বিশেষ পছন্দের। একইভাবে তিনি পার্টি অফিসে থেকে রাজনীতির পরিবর্তে মানুষের বাড়িঘরে গিয়ে তাদের সুখ দুঃখের খবর নিয়ে রাজনীতি করতেই বেশি পছন্দ করেন। তার এই জনদরদি মনোভাবের ফলেই গত কয়েক বছরে বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে ভাজপার ভোটার বেড়েছে। বিরোধীদের সাম্প্রদায়িক কূটনৈতিক চালের জন্য সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে হারলেও জনসমর্থনে মোটেও ভাটা পড়েনি তফাজ্জল হোসেনের। বরং কিছুদিন আগে বক্সনগরে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কয়েক সহস্র লোক সিপিআইএম এবং কংগ্রেস ছেড়ে তফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে বিজেপি দলে যোগ দিয়েছেন। বক্সনগর কেন্দ্রের উপজাতি ভোটারদের একটা বৃহৎ অংশও তোফাজ্জল হোসেনকে নিজেদের নেতা হিসেবে মেনে নিয়ে উনার সঙ্গে থাকতে পছন্দ করেন। সব মিলিয়ে ভাজপার সংখ্যালঘু নেতাদের মধ্যে বক্সনগর কেন্দ্রের টিকেটের প্রথম দাবিদার তফাজ্জল হোসেন। সূত্রের খবর দলীয় ভাবেও তফাজ্জল হোসেনের দিকেই রাজ্য নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিভিন্ন শাখা সংগঠন এবং যুব নেতৃত্ব সমর্থন করছেন। যদিও প্রার্থী তালিকায় দলের রাজ্য কমিটির সদস্য জসিম উদ্দিন, ভাজপার সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি শাহ আলম মজুমদার সহ আরো কয়েকজনের নাম উঠে আসছে।
কিন্তু তাদের অনেকেই কৃষ্ণনগর পার্টি অফিস কেন্দ্রিক রাজনীতির জন্য পরিচিত হলেও জনসমর্থনের নিরিখে শূন্যের কৌটায় রয়েছেন। দল এই ক্ষেত্রে কি সিদ্ধান্ত নেয় তারই অপেক্ষায় রয়েছেন বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রের নাগরিক মহল সহ রাজ্যের বৃহৎ অংশের সংখ্যালঘু সমাজ।
Recent Comments