প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,, ১৬ মে,,
“কোথায় গেল স্বর্ণকুমারের লাল টুপি; কোথায় ছিল জ্যাক এন্ড জিল ,,” কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে আসামি পলায়ণের ঘটনায় বুধবার রাতে এই খবর প্রকাশিত হয়েছিল নর্থইস্ট প্রতিধ্বনিতে । তথ্যনির্ভর এই প্রতিবেদনের পর টনক নড়ে রাজ্য প্রশাসনের।

১৩ মে কুখ্যাত স্বর্ণকুমার ত্রিপুরার তৃতীয় দফায় জেল পলায়নের ঘটনায় বরখাস্ত করা হল কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার দেবাশীষ শীলকে। বিশালগড় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে বন্দি পলায়নের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত জেলার দেবাশীষ শীল সহ তিন কারারক্ষীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত দুই কারারক্ষী হলেন গার্ড কমান্ডার মফিজ মিয়া এবং ওয়ার্ডার তপন রূপিণী। গতকাল বিশালগড় থানার পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছিল

সূত্রের দাবি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের বরখাস্তের নির্দেশ জারি করা হয়। এই তিনজনকে বরখাস্ত করা ছাড়াও কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ভেতরে আরো ৪ কারারক্ষীকে সেন্ডবাই তথা স্থিতাবস্থায় রাখা হয়েছে। এই চারজন কারারক্ষীর মধ্যে রয়েছেন গার্ড কমান্ডার অমল দেববর্মা, সেন্ট্রি ভানু পদ দেববর্মা, মণিন্দ্র দেববর্মা এবং রাজু দেববর্মা। গতকালকে থেকেই তাদেরকে কোন ধরনের ডিউটি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি বৃহস্পতিবার সুপার এবং পুলিশের উপস্থিতিতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলেও খবর। তাদের মধ্যে দুজনকে বরখাস্ত করা হতে পারে বলে জানা গেছে। সূত্রের দাবি গত ১৩ মে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে কুখ্যাত জঙ্গি স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা পলায়নের ঘটনায় জেলার দেবাশীষ শিলের ভূমিকা অত্যন্ত রহস্যজনক ছিল। জেলারের নির্দেশে দুই মাস আগে কুখ্যাত জেল পলাতক স্বর্ণকুমার ত্রিপুরার পোশাক থেকে লাল টুপি খুলে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি ঘটনার রাতে জেলার দেবাশীষ শিলের নির্দেশে সংশোধনাগারের ভেতরের দুটি কুকুর জ্যাক এন্ড জিলকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী রাতের বেলায় কুকুর গুলোকে সংশোধনাগারের ভেতরে ছেড়ে দেওয়া কিংবা খোলা জায়গায় রেখে দেওয়ার কথা । অত্যন্ত রহস্যজনকভাবে ভারপ্রাপ্ত জেলার দেবাশীষ শীল ১৩ মে সন্ধ্যার পর জ্যাক এন্ড জিলকে খোলা না রাখে একটি ঘরের মধ্যে খাবার দিয়ে আটকে রেখেছিলেন। জ্যাক এন্ড জিল ঘুমিয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে রাত সাড়ে বারোটার পর স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা নিজের সেল থেকে বের হয়ে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা নিরাপদে সংশোধনাগারের ভেতরে ঘোরাফেরা করে। সূত্রের দাবি রাতে নিজের সেল থেকে বের হলেও স্বর্ণকুমার ত্রিপুরা রাতে সেখান থেকে পালিয়ে যায়নি। কারণ সংশোধনাগারের উঁচু ওয়ালের উপর রয়েছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের তার। এসব তারে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। স্বর্ণকুমার সেই বিষয়টি জানতো। তাই রাতে সে জীবন ঝুঁকি নিয়ে জেলের প্রাচীর টপকে যাওয়ার পরিবর্তে ভোরের আলো ফোটার পর কারা রক্ষীর পোশাক পড়ে জেল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বলে সুত্রের দাবি। অভিযোগ ঘটনার পরপরই জেলার দেবাশীষ শীল এসব কিছু জানতেন। কিন্তু তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে জেলের সুপার সহ উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিক বিষয় গোপন করে রাখেন। নর্থইস্ট প্রতিধ্বনি- র প্রতিবেদনে স্বর্ণকুমারের লালটুপি সহ জ্যাক এন্ড জিলের খবর প্রকাশের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলার দেবাশীষ শিলের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে ভারপ্রাপ্ত জেলার দেবাশীষ শিলের একাধিক দুর্বলতা প্রমাণিত হওয়ার পর তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই জেল পলায়নের ঘটনায় আগামী দিনে দেবাশীষ শীলকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও সূত্রের দাবি।
Recent Comments