প্রতিধ্বনি প্রতিনিধি,, আগরতলা,,১৪ জুলাই,,
রবিবার ছুটির দিনে এমনিতেই রাজধানী এবং মহকুমা শহরগুলোতে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ থাকে। স্বাভাবিকের তুলনায় কম থাকে লোকসমাগম। কর্মচারী সহ স্কুল-কলেজ যাতায়াতকারী থাকেনা বলে বড় যানবাহনের চলাচলও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম থাকে। রবিবার ছুটির দিনেই দলীয় প্রার্থী দুলাল শীল খুনের প্রতিবাদে রাজ্যে ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বামফ্রন্ট রাজ্য কমিটি। বামফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্ব হিংসার বিরুদ্ধে আহুত ধর্মঘটে রাজ্যের সাধারণ নাগরিকের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন চেয়েছিলেন। ধর্মঘটের সমর্থনে শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানী দাপিয়ে মিছিল করে সিপিএম।
সন্ধ্যায় বামফ্রন্টের ধর্মঘট ঘোষণার পর রাতেই সাংবাদিক সম্মেলন করে ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে শাসকদল বিজেপি। বামফ্রন্টের ধর্মঘট মানুষ মেনে নেবে না বলে দাবি করেছিলেন বিজেপির প্রদেশ প্রচার সম্পাদক নব্যেন্দু ভট্টাচার্য। ধর্মঘটের রাজনীতির বিরোধিতা করে তিনি জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে দাবি রাখেন। একইভাবে রবিবার খার্চি উৎসবের প্রথম দিনে বামফ্রন্টের ধর্মঘটে নিয়ে আপত্তি তুলেছেন তিপরা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন। জনজাতিদের ঐতিহ্যবাহী উৎসবের দিনে ধর্মঘট ডাকা ঠিক হয়নি বলে বামফ্রন্টকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মহারাজ।
একইভাবে বামফ্রন্টের ধর্মঘটে অনেকটাই নীরব ভূমিকায় রয়েছেন তাদের বন্ধুদল রাজ্য কংগ্রেসের নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে বামফ্রন্টের আহুত ধর্মঘট সব রাজনৈতিক দলের কাছেই গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। কিন্তু তারপরও রবিবার ধর্মঘটের দিন অন্যান্য রবিবারের তুলনায় সকাল থেকে শহরের চিত্র একটু ভিন্ন রকম রয়েছে। যাত্রীবাহী বড় যানবাহন চলাচল এদিন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম। ছোট যানবাহনের সংখ্যা অন্যান্য রবিবারের মতো নয়।
লেইক চৌমুনি বাজার সহ শহরের বিভিন্ন দিকে বাজারগুলো খোলা থাকলেও ভিড় একেবারে নেই বললেই চলে।
রেল চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বামপন্থীদের একাংশের অভিমত ধর্মঘটে নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ধর্মঘটের সমর্থনে কিংবা বিপক্ষে আগরতলায় কোন পিকেটিং কিংবা মিছিল হয়নি। ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে নেই কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর। মেলারমাঠ, মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন সহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পুলিশ পিকেট রয়েছেন। পুলিশ টিএসআরের সাথে কিছু জায়গাতে রয়েছে সিআরপিএফ জোয়ান। পুলিশ সূত্রে খবর সকাল দশটার পর মেলারমাঠ থেকে বামফ্রন্টের একটি মিছিল বের হয়ে জিবি হাসপাতাল পর্যন্ত যেতে পারে। সেখানে দলীয় প্রার্থী প্রয়াত দুলাল শীলের মৃতদেহ নিয়ে সেই মিছিল ঘুরে মেলারমাঠ পর্যন্ত আসবে। এরপরে মরদেহ বিলোনিয়া বাড়িতে পাঠানো হবে। সে সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশের কড়া নজরদারি থাকবে। প্রসঙ্গত শুক্রবার রাতে বিলোনিয়ায় দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বামফ্রন্টের নির্বাচন প্রার্থী বাদল শীল। তাঁকে প্রচন্ডভাবে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। পরবর্তীকালে শনিবার দুপুরে জিবি হাসপাতালে তিনি মারা যান।বামফ্রন্টের অভিযোগ শাসক দলের দুষ্কৃতীরা পরিকল্পিতভাবে তাঁকে খুন করেছে। সেই খুনের প্রতিবাদে রবিবার সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টার ধর্মঘট ডেকেছিল বামফ্রন্ট রাজ্য কমিটি।
সেই ধর্মঘটে আগরতলা শহরে বাজারহাট এবং গাড়ি চলাচল থাকলেও নাগরিক মহলের স্বতঃস্ফূর্ততা অনেকটাই কম রয়েছে।
Recent Comments