সংবাদ প্রতিনিধি,, আগরতলা,,১৯ জুন,,
আসন্ন ঈদ উল আযহা উপলক্ষে রাজ্যে পশু কোরবানির ক্ষেত্রে কোন প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা নেই। Prevention of cruelty to animal act 1960 অনুযায়ী ভারতের পশু কল্যাণ বোর্ডের নিয়ম নীতি মেনে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পশু কুরবানী দিতে পারবেন রাজ্যের ধর্মপ্রাণ মুসলিম অংশের মানুষ। এক্ষেত্রে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে মঙ্গলবার এই কথা জানান রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি শাহ আলম মজুমদার।

ওয়াকফ বোর্ডের অফিসে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে শাহ আলম সাহেব জানান বর্তমান সরকার সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সব অংশের মানুষ যাতে একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকতে পারে এবং ধর্মীয় রীতি নীতি পালন করতে পারে সেই জন্য সচেষ্ট রয়েছে রাজ্য বিজেপি সরকার। কিন্তু এক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিককে লক্ষ্য রাখতে হবে তার ধর্মীয় আচার-আচরণের যাতে অন্যের অসুবিধা তৈরি না হয়। এইজন্য কুরবানী ঈদে যারাই কুরবানী করবেন তারা যাতে অন্য ধর্মের লোকেদের অসুবিধা সৃষ্টি না করেন এবং জবাই করা পশুর অপ্রয়োজনীয় অংশ সঠিকভাবে মাটি চাপা দেন তার জন্য তিনি বিশেষভাবে আবেদন জানিয়েছেন। সেই সাথে ভারতের পশু কল্যাণ বোর্ডের জারি করা নির্দেশিকা মেনে পশু পরিবহনের ক্ষেত্রে যাতে পশুদের কোন প্রকার কষ্ট না হয় তার জন্য বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার জন্য ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন। একই সাথে তিনি বলেছেন ত্রিপুরা রাজ্যে সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোন রাজ্যে গরু কুরবানীর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়নি। তাই কুরবানী ঈদে অন্যান্য হালাল পশুর সাথে গরু কোরবানির ক্ষেত্রেও কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। গরু কোরবানির ক্ষেত্রে গর্ভবতী গাভী, তিন মাসের বাচ্চা রয়েছে এমন গাভী কুরবানী দেওয়া যাবে না। শাহ আলম বলেন ইসলাম ধর্ম মতেও এসব বিধি নিষেধ জারি রয়েছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন একটি দুষ্ট চক্র রাজনৈতিক এবং ব্যক্তি স্বার্থে কুরবানী নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। সুস্পষ্ট অভিযোগ আসলে সেই দুষ্টচক্রের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। প্রসঙ্গত আগামী ২৯ জুলাই মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ঈদ উল আযহা তথা কুরবানী ঈদ উৎসব। এই ঈদে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা পশু কুরবানী দিয়ে তার মাংস গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। রাজ্যে বিগত কয়েক বছর যাবৎ দেখা যাচ্ছে কুরবানি ঈদ আসলে উগ্র ধর্মীয় সংগঠনের নাম করে একটি শ্রেণী কুরবানীর পশু বুঝাই গাড়ি আটক করে বিভিন্নভাবে উৎশৃংখলতার চেষ্টা করে। এই অপসংস্কৃতি পরোক্ষভাবে বর্তমান সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দেয়। এই অবস্থায় ওয়াকফ বোর্ড চেয়ারম্যান শাহ আলম সাংবাদিক সম্মেলন করে কুরবানী ঈদ নিয়ে সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছেন এবং নিয়ম মেনে নির্ভীক হয়ে ঈদ পালন করার আহবান রেখে সবাইকে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
Recent Comments